নয়াদিল্লি: গালওয়ান-ডোকলামের পর তাওয়াং। অরুণাচল প্রদেশে চিন সীমান্তে ফের উত্তেজনা। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় ভূখণ্ডের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছে চিন। বারবার অরুণাচলকে নিজেদের এলাকা বলে দাবিও করেছেন চিন সরকার। এবার সেই অরুণাচলের তাওয়াংয়েই ভারতের এলাকায় ঢুকে পড়ার অভিযোগ উঠেছে চিন সেনার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই ঘটনায় এবার পাল্টা ভারতের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলল চিন। তাদের দাবি, তারা নয় ভারতের সেনাই চিনা ভূখণ্ডের মধ্যে ঢুকেছিল। চিনের দাবি, বেআইনি ভাবে ভারত-চিন সীমান্তের বিতর্কিত এলাকায় চলে আসে ভারতীয় সেনা। তারা নাকি চিনা টহলদারি দলকে বাধা দেয়। সেই কারণেই নাকি ঝামেলা হয়েছে।
কী ঘটেছিল:
সূত্রের খবর, অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াঙ সেক্টরে গত ৯ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের সংঘর্ষে চিনা বাহিনীকে কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। সংঘর্ষে ভারতীয় জওয়ানদের থেকে চিনা জওয়ানদের জখম হওয়ার সংখ্যা বেশি। ওই সূত্রের আরও দাবি, চিনারা প্রায় ৩০০ সেনা নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। কিন্তু তৈরি ছিল ভারতীয় সেনাও। তবে ৯ ডিসেম্বর চিনা সেনা এবং ভারতীয় সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষের পরপরই সেখান থেকে দুই দেশের বাহিনী সরে যায়। ফলে সংঘর্ষ আর বেশি দূর এগোয়নি।
এর আগে গালওয়ানেও:
এর আগে গালওয়ানে দুই দেশের সেনা মুখোমুখি হয়েছিল। সীমান্ত বিবাদ গড়িয়েছিল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। ষাটের দশকের যুদ্ধের পরে সেটাই ছিল ভারত-চিনের মধ্যে সরাসরি প্রথম রক্তক্ষয়ী বিবাদ। ওই ঘটনায় অন্তত ২০ জন ভারতীয় জওয়ান মারা যান। চিনের তরফে সরকারিভাবে স্বীকার করা না হলেও নানা সূত্রে খবর পাওয়া যায় ওই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন একাধিক চিনা জওয়ানও।
এই পরিস্থিতিতে আজ সংসদে এনিয়ে বিবৃতি জারি করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, 'ভারত-চিন উভয় পক্ষের সেনার সংঘর্ষে কোনও জওয়ান মারা যাননি। বা গুরুতর জখম হয়নি। সংঘর্ষের পর কূটনৈতিক স্তরে ভারত সরকার চিনের সঙ্গে কথা বলেছে। সীমান্তে যে কোনও রকম চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত আমাদের বাহিনী।' তাঁর সংযোজন, পিএলএ-কে সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দিয়েছে আমাদের সেনাবাহিনী। যাতে ওরা আমাদের এলাকায় ঢুকে না পড়ে। ওদের কার্যত নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন জখম হয়েছেন। কিন্তু, কোনও প্রাণহানি বা গুরুতরভাবে কেউ জখম হননি।
চিনের তরফে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়ান ওয়েবিন বলেন, আমাদের কাছে যতটা খবর তাতে ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি সার্বিকভাবে স্থিতিশীল আছে। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে বাধাহীন আলোচনা চলছে।
আরও পড়ুন: 'কেন্দ্রের নীতির জন্যই আগ্রাসী চিন', সীমান্তে সংঘর্ষ ইস্যুতে সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা