পাটনা: রোগ হয়েছিল। চিকিৎসার আশায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন যুবক। চিকিৎসা তো মিললই না, উল্টে সম্পূর্ণ ভুল অস্ত্রোপচার হল ওই যুবকের। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে চরম গাফিলতির এই নিদর্শন দেখা গেল বিহারে (Bihar)। সে রাজ্যের কাইমুর জেলায় একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এমনই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।


এক অবিবাহিত যুবক হাইড্রোসিল রোগে ভুগছিলেন। তারই চিকিৎসা করাতে তিনি ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছিলেন। সেখানে চিকিৎসক ওই যুবকের হাইড্রোসিলের চিকিৎসার পরিবর্তে ভ্যাসেক্টমি করেছেন বলে অভিযোগ। ভ্যাসেক্টমি (Vasectomy) বা ভ্যাসোলাইগেশন একটি অস্ত্রোপচার, যা কোনও পুরুষের জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা বাদ দিতে বা নির্বীজকরণ করতে করা হয়। 


ওই ব্যক্তি হাইড্রোসিলে (Hydrocele) আক্রান্ত ছিলেন। তিনি চৈনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। বুধবার তাঁর অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। সেটা হয়। কিন্তু হাইড্রোসিল অস্ত্রোপচারের বদলে তাঁর ভ্যাসেক্টমি করা হয় বলে অভিযোগ। এমন ঘটনায় বিস্মিত ও হতবাক ওই ব্যক্তির গোটা পরিবার। ঘটনার জেরে মানসিকভাবেও প্রবল আঘাত পেয়েছে গোটা পরিবার। পরে পুলিশের কাছে ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।


কী বলছেন ওই ব্যক্তি:
IANS সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি বলেছেন, 'আমি হাইড্রোসিলে ভুগছিলাম। আশা কর্মীদের পরামর্শ মেনে আমি অস্ত্রোপচার করানোর সিদ্ধান্ত নিই। সেই জন্যই আমি চৈনপুরা হাসপাতালে ভর্তি হই। সেখানে ডাক্তাররা আমার ভুল অস্ত্রোপচার করেছে।' তিনি আরও বলেন, 'আমার কয়েকদিন পরেই বিয়ে হওয়ার কথা। আমি এখন বিয়ে কীভাবে করব? আমার জীবন শেষ করে দিল ওরা। আমরা পুলিশের কাছে ওই ডাক্তারদের নামে লিখিত অভিযোগ করেছি।' ওই ব্যক্তির বাবা বলেন, 'আমার ছেলেরর হাইড্রোসিল হয়েছিল। কিন্তু ডাক্তাররা ভ্যাসেক্টমি করে দিয়েছে। ওর এখনও বিয়ে হয়নি। ডাক্তাররা আমার ছেলের জীবন বরবাদ করেদিল। আমি চাই প্রশাসন ওদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করুক।'


ডাক্তারদের দাবি:
যদিও ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অভিযুক্ত চিকিৎসকরা এই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, তাঁরা রোগীদের ভ্যাসেক্টমির বিষয়ে জানিয়েছিলেন, ওই নিয়ে যাবতীয় তথ্য তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। সব জানানোর পরে ওই ব্যক্তির সম্মতি নিয়েই এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।


চৈনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুনীল কুমার বলেন, 'এই ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে। এই নিয়ে একটি তদন্ত শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরে আমরা একটি রিপোর্ট সাবমিট করব। কেউ দোষীসাব্যস্ত হলে অবশ্যই কড়া পদক্ষেপ করা হবে।'


আরও পড়ুন: অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপট শহরে, শিশু হাসপাতালে বেডের সঙ্কট