রঘুনাথপুর: হাসপাতালে মূল গেটের পাশে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকল এক ভবঘুরের মৃতদেহ। করোনা আবহে মুখ ফিরিয়ে নিলেন অনেকেই। শেষপর্যন্ত শাসক দলের এক নেতার উদ্যোগে দেহ উদ্ধারের ব্যবস্থা হয়। দায় এড়িয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


সকাল থেকেই সবার নজরে এসেছিল দৃশ্যটা। গেটের সামনে বডি পড়ে থাকার ভিস সবাই দেখেছেন, পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছেন। এগিয়ে আসেননি কেউ। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সরকারি হাসপাতালের গেটের সামনে পড়ে রইল অর্ধনগ্ন দেহ। অমানবিকতার এই ছবি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত ব্যক্তি ভবঘুরে। বিভিন্ন রোগীর পরিজনদের দাবি, শুক্রবার সকালে তাঁরা হাসপাতালের মূল গেটের পাশে বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। 


বেশ কয়েক ঘণ্টা পর খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হাজারী বাউড়ি। কোভিড প্রোটোকল মেনে দেহটিকে উদ্ধার করে রাখা হয় হাসপাতালের মর্গে।পুরুলিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হাজারি বাউড়ি বলেন, অনেকদিন ধরে থাকত ভবঘুরে, হাসপাতালে বিষয়টি জানাই, প্রশাসনের কাছে অনুরোধ দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা না ঘটে। 


কিন্তু এই কাজ হাসপাতাল করল না কেন? কেন দীর্ঘক্ষণ এভাবে পড়ে থাকল দেহ?  যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের কোনও গাফিলতি হয়নি। রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার  সোমনাথ দাস জানিয়েছেন, একজন ভবঘুরে, মাঝেমধ্যে দেখা যেত, আমরা থানাকে জানিয়ে দিয়েছে, আমাদের যা করণীয় তা করা হয়েছে, উনি তো আমাদের রোগী নন, দাবিহীন দেহ বলে সময় লাগে


করোনা আবহে দেখা গিয়েছে একের পর এক অমানবিক ছবি। কখনও প্রিয়জনদের থেকেই মুখ ফিরিয়েছেন আত্মীয়রা। কোথাও রোগীর দেহ ফেলে পালানোর অভিযোগ উঠছে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে। কোথাও  আবার সংক্রমিতের দেহ উদ্ধারে উঠেছে গড়িমসির অভিযোগ। তাহলে কি জীবনের সঙ্গে মানবিকতাকেও কুরে কুরে খাচ্ছে করোনা? এই প্রশ্ন তুলে দিল রঘুনাথপুরে হাসপাতাল চত্বরে ভবঘুরের মৃত্যুর এই ঘটনা।