বিটন চক্রবর্তী, নন্দকুমার : আবাস যোজনার বাড়ি পেতে ফের আমরা-ওরার অভিযোগ। বিজেপি করায় তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত আবাস যোজনার বাড়ি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। অভিযোগ অস্বীকার প্রধানের। নন্দকুমারের কুমরচক এলাকার এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।


নন্দকুমার থানা এলাকার কুমরচক গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবদত্তপুরের বাসিন্দা সুদর্শন মণ্ডলের সম্বল বলতে এক চিলতে ভাঙাচোরা বাড়ি। ছিটে বেড়ার দেওয়াল ইতিমধ্যে ভেঙে পড়েছে, সেখানে পলিথিন দিয়ে কোনওরকমে বৃষ্টির ঝাপটা আটকানোর চেষ্টা করা হয়। টালির চালও ভেঙে ভেঙে পড়ছে। রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে সেখানেও পলিথিন ঢাকা। 


একটা সময় এই বাড়ি থেকেই তাঁত মেশিনের খটাখট শব্দে ভরে উঠত গোটা এলাকা। স্বচ্ছলভাবে চলে যেত সুদর্শনবাবুর সংসার। কিন্তু, ভাঙাচোরা ঘরে, অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জেরে সেই মেশিনও আজ অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে, অন্যের বাড়িতে দিনমজুরি করে কোনও রকমে সংসার চালান তিনি। কিন্তু, আর্থিক অনটনের জেরে ঘরটি সারিয়ে উঠতে পারেননি, পারেননি নতুন ঘর করতেও। আমফান কিংবা ইয়াস, দুই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কোনও ক্ষতিপূরণও পাননি তিনি। বহু আশা নিয়ে আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির আবেদন করেছিলেন। স্থানীয় কুমরচক গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রয়োজনীয় কাগজ সহ নিজের এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যর সই করা নির্দিষ্ট ফর্মও জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু সুদর্শনবাবুর অভিযোগ, তিনি বিজেপি করায় তাঁকে সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত করছেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান!


তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ খোদ কুমরচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুধাংশু সামন্ত। তিনি বলেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা লোককে ডেকে ডেকে বাড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমাদের সরকারি কোটা পূরণ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। সে জায়গায় এই অভিযোগ ঠিক নয়। 


আর এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির জেলা নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস গরিব মানুষের আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি করছে। কাটমানি পাওয়ার আশায় বেছে বেছে পাকা ছাদওয়ালা লেকেদের আবাস যোজনার বাড়ি দিচ্ছে। 


পাল্টা বিজেপিকে জবাব দিয়েছে তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, বিজেপি শুধু অভিযোগ করার জন্যই অভিযোগ করছে। কোনও ব্যক্তি যদি সরকারি নিয়মে আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়ার যোগ্য হন, তিনি পাবেন। এখানে দল বা সরকার কোনওভাবেই পক্ষপাতিত্ব করে না।