মুম্বই : প্রয়াত আদিবাসী অধিকার কর্মী ফাদার স্টান স্বামী। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। বন্দিদশাতেই মৃত্যু হল এই সমাজকর্মীর। মুম্বইয়ের বান্দ্রার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। সন্ত্রাস দমন আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল স্টান স্বামীকে।
গত বছর এলগার পরিষদ মামলায় গ্রেফতার হন ৮৪-র এই মানবাধিকার কর্মী। শারীরিক কারণে জামিনের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। ২৮ মে আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে মুম্বইয়ের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। গতকাল থেকে ভেন্টিলেটরে ছিলেন। এরই মধ্যে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।
ঝাড়খণ্ডে পাঁচ দশক ধরে আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করেছেন স্টান স্বামী। তাঁর বিরুদ্ধে মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ ওঠে। এনআইএ অভিযোগ তোলে। এর পর পুণের কাছে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেই কোরেগাঁও-ভীমা অশান্তির ঘটনা। যে ঘটনার জেরে মৃত্যু হয় একজনের। তদন্তকারীরা দাবি করেন, এলগার পরিষদের বৈঠক চলাকালীন সমাজকর্মীরা কিছু প্ররোচনামূলক বক্তব্য রাখেন। যার জেরে পরের দিন দানা বাঁধে কোরেগাঁও-ভীমার হিংসার বাতাবরণ।
এরপর ঝাঁড়খণ্ডের রাঁচির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় স্টান স্বামীকে। দিল্লি থেকে এনআইএ-র একটি দল রাঁচি গিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে। এনআইএ-র বক্তব্য, সিপিআই(মাওবাদী)-এর সিনিয়র নেতারা এলগার পরিষদের আয়োজক ও গ্রেফতার হওয়া সমাজকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। ওই ঘটনায় আরও কয়েকজন সমাজকর্মী, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী গ্রেফতার হন। ধৃতদের মধ্যে স্টান স্বামীই ছিলেন সবথেকে বয়স্ক। গতমাসে তিনি করোনায় আক্রান্তও হন। তাঁকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা করা হয়। ফের তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।
গত সপ্তাহে জামিনের জন্য নতুন করে বোম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানান স্টান স্বামী। আদালতকে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি জানান, তালোজা জেলে তাঁর শারীরির অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। যদি তাঁকে অন্তবর্তী জামিন না দেওয়া হয়, তাহলে শীঘ্রই তিনি মারা যাবেন। তিনি চিকিৎসার আবেদন জানান। এর পাশাপাশি তালোজা জেলে অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কথাও তুলে ধরেন। এমনকী করোনা পরিস্থিতিতে জেলে শারীরিক দূরত্ববিধি না মানা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, চিকিৎসা পরিষেবার অভাব ইত্যাদির অভিযোগ তোলেন কারা আধিকারিকদের বিরুদ্ধে।