ওয়াশিংটন: পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। যাতে হাত দেন, তাতেই সোনা ফলে। এমনকি তাবড় শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকার নির্বাচনের মোড়ও ঘুরিয়ে দিতে পারেন। সেই ইলন মাস্ককে নিয়ে এবার চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন তাঁরই জীবনীকার সেথ অ্যাব্রামসন। তাঁর দাবি, মাস্ক গুরুতর অসুস্থ। সরকারের উচিত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া। (Elon Musk)
মাস্কের জীবনীকার সেথ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দাবি করেন। মাস্কের মালিকানাধীন মাইক্রোব্লগিং সাইট X (সাবেক ট্যুইটার)-এ এমন দাবি করেন তিনি। জানান, গত দু'বছর ধরে মাস্কের আচরণের উপর নজর রাখছেন তিনি। মাস্ক নিজেও নিজের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সমস্যা স্বীকার করেছেন। স্বীকার করেছেন মাদন সেবন, দুশ্চিন্তার কথা। সেথের দাবি, মাস্ক উন্মাদ হয়ে যাওয়ার পথে এগোচ্ছেন। এখনই সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। 9Elon Musk Mental Health)
সোশ্যাল মিডিয়ায় সেথ লেখেন, 'মানসিক অসুস্থতার কথা স্বীকার করেছেন মাস্ক। মাদকসেবন, পঙ্গু করে দেওয়ার মতো মানসিক চাপের কথা মেনেছেন। মাস্ক যে গুরুতর অসুস্থ, তা নিয়ে শঙ্কার যথেষ্ট কারণ রয়েছে'। সেথ জানিয়েছেন, মাস্কের ব্যক্তিগত সংগ্রামের মারাত্মক ফল ভোগ করতে হতে পারে আমেরিকার সাধারণ মানুষকে। এমন বহু সংস্থায় তাঁর বিনিয়োগ রয়েছে, যা মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে। আবার আমেরিকার সরকারেও তাঁর প্রভাব রয়েছে যথেষ্ট। সেথের বক্তব্য, 'একাধিক শিল্প এবং হবু প্রেসিডেন্টের উপর প্রভাব রয়েছে মাস্কের। অর্থাৎ ওঁর উন্মাদ আচরণ এবং হিংসার প্রতি উস্কানি জোগানোর অভ্যাস আমাদের সকলকে বিপদে ফেলতে পারে। ইলন মাস্কের হাত থেকে আমেরিকাকে রক্ষা করতে হবে'।
আমেরিকায় এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন মাস্ক। ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠবৃত্তে ঢুকে পড়েছেন তিনি। ট্রাম্প সরকারেও মাস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকতে পারেন বলে জল্পনা। সেই আবহেই তাঁর সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন সেথ। জো বাইডেন সরকারের হাতে এখনও সময় আছে। মাস্ক এবং তাঁর সংস্থার সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমস্ত চুক্তি বাতিল করে, তদন্ত শুরু করা উচিত বলে মত সেথের। এখনই ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে আমেরিকাকে ফল ভোগ করতে হবে বলে দাবি তাঁর।
হার্ভার্ড ল স্কুলে পড়াশোনা সেথের। তিনি যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তাতে সায় জানিয়েছেন অনেকেই। যেভাবে ব্রিটেনের সরকারের সমালোচনা করেছেন তিনি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সেই আবহেই আমেরিকার বর্তমান সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করলেন সেথ। মাস্কের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আগেও প্রশ্ন ওঠে। গতবছর একটি রিপোর্ট সামনে আসে। জানা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে সান ফ্রান্সিসকোয় ক্ষোভের মুখে পড়ে মানসিক ভাবে একেবারে ভেঙে পড়েন তিনি। ঘরবন্দি করে নেন নিজেকে। X-এর কর্মীরা মাস্কের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি নিজের নিজেকে আঘাত করতে পারেন বলে আশঙ্কা দেখা দেয়। চিকিৎসক ডাকার তোড়জোড় শুরু হয়।
চরম দক্ষিণপন্থী টমি রবিনসন, যিনি জেলে রয়েছেন, তাঁর প্রতিও সম্প্রতি সমর্থন জানান মাস্ক। মাস্কের বোধবুদ্ধি, সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই।