নয়াদিল্লি: বাবা রামদেবের করোনাভাইরাস ঠেকানোর দাওয়াই উদ্ভাবনের দাবি নাকচ ডাক্তারদের। রামদেব একটি প্রমোশন ভিডিওতে চলতি সপ্তাহে দাবি করেন, আমরা বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা করে দেখেছি অশ্বগন্ধা করোনা প্রোটিনকে মানব দেহের প্রোটিনের সঙ্গে মিশতে দেয় না। নিজের সংস্থা ‘পতঞ্জলী’র অশ্বগন্ধার দাওয়াই বের করার পিছনে কোনও প্রমাণ দেননি তিনি। তবে বলেন, দাওয়াইটি একটি আন্তর্জাতিক জার্নালকে পাঠানো হয়েছে। অবশ্য তার নাম জানাননি।
তবে আন্তর্জাতিক স্তরে যেমন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, সেইমতো রামদেব হ্যান্ড স্যানিটাইজারে হাত ধোওয়া, অন্যের থেকে দূরে থাকার কথাও বলেছেন। কোভিড-১৯ রোধ বা তার চিকিত্সার কোনও ভ্যাকসিন বা ওষুধ এখনও বেরয়নি। যদিও তা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে পুরোদমে।
কিন্তু বিজ্ঞানী, গবেষকদের মত, এহেন দাবির ভিত্তি নেই। সরকারকে রামদেবের দাবি করা দাওয়াইয়ের মতো পণ্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন পাবলিক হেলফ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়া সংস্থার মহামারী সংক্রান্ত প্রফেসর ডাঃ গিরিধর বাবু। তিনি বলেছেন, এধরনের বার্তা একটা মিথ্যা সুরক্ষা বোধ তৈরি করে। যাঁরা বেশি পড়াশোনা করেননি, তাঁরা এতে বিভ্রান্ত হবেন। এমনকী রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নিয়ে নির্বিষ ট্যুইটও মানুষকে ঘাবড়ে দেয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সংস্থার তরফে ফোনে, ইমেলে পতঞ্জলী, রামদেবের প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলেও সাড়া মেলেনি।
রামদেব দফায় দফায় ট্যুইট করেও #YogaForCorona হ্যাশট্য়াগ দিয়ে ভারতবাসীকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যোগব্যায়ামের পরামর্শ দেন। আয়ুর্বেদের কথাও বলেন যাতে জড়িবুটি, ভেষজ ওষুধের রোগ সারানোর দাবি করা হয়।
পতঞ্জলি ভারতের সুপরিচিত আর্য়ুবেদ ব্র্যান্ডগুলির অন্যতম। তাদের পাশাপাশি আরও কিছু আর্য়ুবেদ ওষুধ নির্মাতা সংস্থা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় নিজেদের পণ্যের প্রচার করে চলেছে।
গোটা দুনিয়ায় ভারত সহ ১৪০টির বেশি দেশে হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। কয়েক লক্ষ লোক আক্রান্ত, মারা গিয়েছে সাত হাজারের ওপর। ভারতেও দ্রুত থাবা বসাচ্ছে এই মারণ ভাইরাস। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
এই অবস্থায় আর্য়ুবেদ ওষুধ কোম্পানিগুলির করোনাভাইরাস রোখার দাওয়াইয়ের বিজ্ঞাপনে ক্ষুব্ধ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এতে লড়াইটা মার খাবে।
২০১৪ সালে আর্য়ুবেদ ওষুধ, যোগব্য়ায়ামকে জনপ্রিয় করতে আয়ুষ মন্ত্রক গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মনোজ নেসারি নামে মন্ত্রকের জনৈক পরামর্শদাতাও আয়ুর্বেদ কোম্পানিগুলির ওষুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় বলে মনে করছেন। যদিও তাতে করোনাভাইরাস রোধ হয়, এমন দাবির বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে জানিয়েছেন। বলেছেন, করোনাভাইরাস একটি নতুন জীবাণু। স্বাভাবিক ভাবেই তা সারার কোনও প্রমাণ নেই। অভিযোগ এলেই খতিয়ে দেখা হবে।