নয়া দিল্লি: নির্বাচনী বন্ড শুধু ভারতের নয়, সারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুর্নীতি। এর জন্য নরেন্দ্র মোদির সরকারকে ভুগতে হবে, এমনটাই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের স্বামী ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ পরাকলা প্রভাকর। তাঁর দাবি, এই নির্বাচনী বন্ড আগামী দিনে আরও বেশি করে প্রচারিত হবে।


কথায় বলে, লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন। কিন্তু, ভোটে লড়তে এখনকার গৌরী সেন অর্থাৎ দেশের বড় কর্পোরেট সংস্থা, পুঁজিপতিরা যেভাবে  বিজেপিকে ঢেলে টাকা দিয়েছে, তা দেখে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। মোদি সরকারের চালু করা ইলেকটোরাল বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি যে টাকা পেয়েছে তার ধারে কাছে কেউ নেই। 


তথ্য অনুযায়ী, বন্ড থেকে রাজনৈতিক দলগুলির মোট যা আয় হয়েছে বিজেপি একাই তার প্রায় ৪৭ শতাংশ পেয়েছে। পুঁজিপতিরা বিজেপিকে ঢেলে টাকা দিয়েছে, কিন্তু সেই লক্ষ্মীলাভে বিজেপির ধারেকাছে নেই কংগ্রেস। তারা নেমে গেছে তৃতীয় স্থানে। উল্টে বিজেপিরই পরই সবচেয়ে বেশি লক্ষ্মীলাভ হয়েছে তৃণমূলের। 


আর এই প্রেক্ষাপটে বিস্ফোরক মন্তব্য় করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের স্বামী এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ পরাকালা প্রভাকর। তাঁর দাবি, নির্বাচনী বন্ড শুধু ভারতের নয়, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুর্নীতি। খোদ মোদি সরকারের অর্থমন্ত্রীর স্বামীর এই মন্তব্য় সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে কেরল কংগ্রেস।


মোদি সরকারের আমলেই নির্বাচনী বন্ড চালু করা হয়।সরকার চেয়েছিল কোনওদিনই কোন কোম্পানি, কোন দলকে বন্ডের মাধ্যমে টাকা দিচ্ছে তা যেন সামনে না আসে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে নির্দেশ দেয় বন্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনতে। কিন্তু এসবিআই এ নিয়ে গড়িমসির পর আরও কড়া অবস্থান নেয় সুপ্রিম কোর্ট। শেষ অবধি একপ্রকার বাধ্য় হয়েই বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দেয় স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। আর পরিসংখ্যান বলছে হায়দরাবাদের সংস্থা মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংই সবচেয়ে বেশি টাকা চাঁদা দিয়েছে বিজেপিকে। যার পরিমাণ একশো, দু'শো নয়... ৫৮৪ কোটি টাকা। 



নির্বাচনী বন্ডের মাধ্য মে কংগ্রেস চাঁদা পেয়েছে ১ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। কংগ্রেসকে সবথেকে বেশি চাঁদা দিয়েছে ওয়েস্টার্ন UP পাওয়ার, ১১০ কোটি।


তবে নির্বাচনী বন্ড থেকে পাওয়া মোট চাঁদার নিরিখে বিজেপি এবং তৃণমূলের থেকে পিছিয়ে কংগ্রেস। বিজেপির প্রাপ্ত চাঁদার অঙ্ক ৬ হাজার ৬০ কোটি টাকা। তৃণমূলের ঝুলিতে গেছে ১ হাজার ৬১০ কোটি টাকা।  আর কংগ্রেস পেয়েছে ১ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। 


জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে এসবিআইয়ের দেওয়া নির্বাচনী বন্ডের তথ্য অনুয়ায়ী, স্যান্টিয়াগো মার্টিনের সংস্থা ফিউচার গেমিং অ্য়ান্ড হোটেল সার্ভিসেস তৃণমূলকে সর্বাধিক ৫৪২ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে। অর্থাৎ এই লটারি সংস্থার মোট চাঁদার ৪০ ভাগই তৃণমূলের ভাণ্ডারে গেছে।