রাঁচি : ভারতে প্রথম কোভিড লকডাউনের জের। উন্নতি হয়েছে বাতাসের গুণগত মানের। এর পাশাপাশি দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদের মতো শহরে ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের তাপমাত্রা কমেছে। এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা।


ঝাড়খণ্ডের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা চালিয়েছেন। তাঁরা দেখেছেন, শিল্পক্ষেত্রে কাজকর্ম কমে যাওয়ায় এবং স্থলপথ ও আকাশপথে পরিবহন কমায় পরিবেশের তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি হয়েছে।


এই পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞানীরা আর্থ অবজারভেশন সেন্সর, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির Sentinel-5p এবং নাসার MODIS সেন্সর-এর ডাটা ব্যবহার করেছেন। এই তথ্য ব্যবহার করে ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে তাপমাত্রার পরিবর্তন, বায়ুমণ্ডল দূষণকারীগুলিকে খতিয়ে দেখা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা ২০২০-র মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত লকডাউন পর্বের ডাটার সঙ্গে দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদে অতিমারির আগের বছরগুলির তথ্য তুলনা করে দেখেন।    


বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণা এনভায়রনমেন্ট রিসার্চ জার্নালে প্রকাশ করেছেন। তা থেকে জানা গিয়েছে, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমেছে। দেশের প্রধান শহরগুলিতে ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের তাপমাত্রা গত পাঁচ বছরের(২০১৫-১৯) তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। দিনে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত শীতল এবং রাতে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত শীতল থাকছে। 


এই গবেষণা প্রসঙ্গে ঝাড়খণ্ডের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বিকাশ পারিদা বলেন, এয়ারোসোল টাইপ সোর্স, যেমন- অর্গানিক কার্বন, ব্ল্যাক কার্বন, মিনারেল ডাস্ট এবং সি সল্ট তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমেছে। 


সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যারেথ রবার্টস বলেছেন, পৃথিবীর পরিবেশ সম্পর্কে সময়ে সময়ে তথ্য পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে স্যাটেলাইট ইনস্ট্রুমেন্ট । পৃথিবীর উপর পর্যবেক্ষণের নথির গুরুত্ব তুলে ধরেছে এই গবেষণা। এর মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলের দূষণকারীগুলির পরিবর্তন খতিয়ে দেখা যায়। বায়ুমণ্ডল এই দূষণকারীগুলি আমাদের শরীরে ঝুঁকি বাড়ায়। 


প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে এখনও বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। তবে কয়েকটিতে তা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতদিন শিল্প ও পরিবহন ব্যবস্থা থমকে থাকায় তারও প্রভাব পরিবেশে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।