নয়াদিল্লি: ফের হিংসার আগুনে প্রাণহানি মণিপুরে (Manipur Violence Kills 5 Civilians)। পরশু সকালের ঘটনার রেশ মেলাতে না মেলাতেই বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার সকালে নতুন করে তেতে ওঠে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। ৫ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়, জখম ৩ বিএসএফ আধিকারিক। এর আগে, পরশু অর্থাৎ বুধবার সকালে, সশস্ত্র জঙ্গি-হানায় মারা যান ২ পুলিশ আধিকারিক। আহত হয়েছিলেন ৬ জন। পর পর দু'দিন মণিপুরের একাধিক জেলায় পরিস্থিতি তেতে ওঠে। বৃহস্পতিবার দিনভর দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে 'মোরেহ' জেলার একটি ঘটনায় মায়ানমারের জঙ্গিদের হাত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন সে রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংহ।


আর যা...
তবে এখনও পর্যন্ত 'মোরেহ'-র ঘটনার সঙ্গে মায়ানমারের জঙ্গি-যোগের কোনও সুস্পষ্ট প্রমাণ পায়নি প্রশাসন। হামলার ধরন-সহ আনুষঙ্গিক কিছু বিষয় দেখে প্রাথমিক ভাবে এই ধারণা রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টার। মণিপুর পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো নাগাদ বিষ্ণুপুর জেলায় সশস্ত্র দুষ্কৃতী হানায় বাবা ও ছেলে-সহ ৪ জনের মৃত্যু হয়। এর প্রত্যেকেই মেইতেই জনগোষ্ঠীর। ঘটনাস্থল থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ইম্ফলের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ নিয়ে আসা হয়। সূত্রের খবর, নিহতদের প্রত্যেকে হামলার সময় খেতে কাজ করছিলেন। এই ঘটনার পর থেকে ইম্ফল উপত্যকা জুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়। 
তবে এই ঘটনার আগে, ইম্ফল ওয়েস্ট জেলার কাংচুপে গ্রামের সশস্ত্র ভলান্টিয়ারদের মধ্যে লড়াই শুরু হলে ২৩ বছরের এক তরুণের মারা যায়। তিনিও মেইতেই জনগোষ্ঠীর, জানায় প্রশাসন।    


প্রেক্ষাপট...
গত বছর মে মাস থেকে শুরু হওয়া হিংসায় দফায় দফায় জ্বলছে মণিপুর। বিরোধীদের অভিযোগ, হিংসা নিয়ন্ত্রণে কোনও উদ্যোগ নেয়নি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। শান্তি ফেরানোর আশ্বাস দিয়ে  কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী হালে 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার' সূচনা করেছেন এই রাজ্য থেকে। মণিপুর যে মোদি-সরকারের কাছে অস্বস্তির কারণ হতে পারে, সে কথা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন অনেকে। কিন্তু আসল প্রশ্ন হল, এতগুলো মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও কেন শান্ত হচ্ছে না উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য? এর মধ্যে মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা আবার জানান, বুধবার ভোরের দিকে তিনটি কমান্ডো পোস্ট লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে সশস্ত্র কুকি জঙ্গিরা। রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা, এতে পাহাড়ের কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্য়ে ক্ষোভের আগুন আরও বাড়তে পারে। এমনিতেই তাঁদের অভিযোগ, কুকিদের আটকাতে দমনমূলক পথ বেছে নিয়েছে মণিপুর সরকার। কুকি মহিলাদের সংগঠন জানাচ্ছে, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ তাঁদের সে রাজ্যের বাসিন্দা বলেই মনে করেন না। তাই কুকি-প্রধান পাহাড়ি এলাকা নিয়ে তাঁর কোনও মতামতই গ্রাহ্য নয়, বক্তব্য তাঁদের।


এই সমস্যার সমাধান হবে কবে? কী ভাবে থামবে রক্তক্ষয়? উত্তর নেই  ৮ মাস পরেও।  


 


আরও পড়ুন:মোবাইল চুরি করতে এসে যাত্রীদের হাতে আটকে 'চোর', চলন্ত ট্রেনের জানলায় ঝুলে পার ১ কিলোমিটার