নয়াদিল্লি: ভিমা কোরেগাঁও হিংসা মামলায় অভিযুক্ত নাগরিক অধিকার আন্দোলনকর্মী গৌতম নভলাখাকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না। বম্বে হাইকোর্ট গ্রেফতারির হাত থেকে তাঁকে যে অন্তর্বর্তী সুরক্ষা দিয়েছিল, শুক্রবার তার মেয়াদ বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলায় নভলাখার বিরুদ্ধে চলতি তদন্তে সংগৃহীত যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ পরের শুনানির দিন পেশ করতে আজ মহারাষ্ট্র সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, এই মামলা থেকে সর্বোচ্চ আদালতের ৫ বিচারপতিই সরে দাঁড়ানোর পর আজ নভলাখার গত মাসে পেশ করা পিটিশনের শুনানি শুরু করেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি দীপক গুপ্তা। নভলাখাকে গ্রেফতারি থেকে হাইকোর্টের দেওয়া সুরক্ষার মেয়াদ আজ শেষ হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগেই শুনানি হয়।
২০১৮-র ১ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের পুণে জেলার ভিমা কোরেগাঁও জাতপাতের সংঘর্ষের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজ করতে নভলাখার আবেদন বম্বে হাইকোর্ট গত ১৩ সেপ্টেম্বর খারিজ করে। প্রাথমিক ভাবে এই মামলার সারবত্তা আছে বলে জানায় তারা। তবে নভলাখা যাতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পর্যাপ্ত সময় পান, সেজন্য তাঁকে তিন সপ্তাহ পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবে না বলেও জানায় হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেন নভলাখা। মামলায় অভিযুক্ত নভলাখা ও অন্যদের মাওবাদী যোগসাজশ আছে, তাঁরা সরকারকে উত্খাত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তোলে পুলিশ। তাদের দাবি, ২০১৭-র ৩১ ডিসেম্বর পুণেতে আয়োজিত এলগার পরিষদের অনুষ্ঠানে অশান্তি, হিংসা ছড়ানোর চক্রান্ত করেছিলেন ওঁরা। সেখানে উসকানিমূলক ভাষণ দিয়েছিলেন নভলাখা ও অন্যরা। অশান্তি, হিংসায় ১ জনের মৃত্যু হয়, ৪০ জন জখম হন। নভলাখা ও বাকিদের অভিযুক্ত করা হয় বেআইনি কার্যকলাপ রোধ আইন (ইউএপিএ) ও ভারতীয় দণ্ডবিধির নানা ধারায়। বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন কবি ভারভারা রাও, আইনজীবী অরুণ ফেরেইরা, ভার্নন গনজালভেস, সুধা ভরদ্বাজ।
পাল্টা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে নভলাখা দাবি করেন, এসব বিরুদ্ধ মত দমনের রাজনৈতিক কৌশল। তাঁর বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ সারবত্তাহীন, সেগুলির পক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণই নেই বলে জানিয়ে দেন নভলাখার আইনজীবীরা। নভলাখা সওয়াল করেন, তিনি কয়েক দশক ধরে মানবাধিকার রক্ষা আন্দোলনের পক্ষে লড়ছেন, রাজনৈতিক প্রশ্নে তাঁর স্পষ্ট অবস্থান সংবিধানে সুরক্ষিত মতপ্রকাশের মৌলিক অধিকারের গণ্ডির মধ্যেই রয়েছে।