কলকাতা: ইজরায়েলের আকাশপথে আলোকরেখার ছটা। একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে এসে যা থমকে দাঁড়াচ্ছে। আপাতত নেটমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ইজরায়েল সেনার পক্ষ থেকে প্রকাশ করা কয়েকটি ছবি। আসলে যেটি তাদের আয়রন ডোমের কার্যক্ষমতা বোঝানো। আলোকরেখা গুলো আসলে গাজা থেকে ছুটে আসা রকেট। কিন্তু এই আয়রন ডোমের সুরক্ষাবলয়ে এসে যার বেশিরভাগই থমকে যায়। আয়রন ডোম আসলে একটি প্রতিরক্ষামূলক আচ্ছাদন। কোনও দেশের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম যা ব্যবহার করে থাকে। রকেট, মর্টার বা অন্য যে কোনও অস্ত্র যাতে এসে ধাক্কা লেগে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। ইজরায়েল সেনারও দাবি, প্রতিপক্ষের ছোড়া রকেটের প্রায় ৯০ শতাংশই তারা আয়রন ডোমের সাহায্যে নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।
সাধারণত কোন দেশ তাদের আকাশ বা জলপথের সীমানায় এই ধরণের আয়রন ডোম ইনস্টল করে থাকে। রকেট, মর্টার থেকে যাবতীয় দূরপাল্লার বিভিন্ন অস্ত্রকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন অদৃশ্য এক দেয়াল এই আয়রন ডোম। ইজরায়েল যে আয়রন ডোম পরিষেবা ব্যবহার করে তা বানিয়েছে ফ্রান্সের বিখ্যাত রাফাল অ্যাডভান্স ডিফেন্স সিস্টেম। এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে গাজা প্রদেশ নিয়ে উত্তেজনার জেরে ২০১১ সালেই ইজরায়েল সরকারের ছাড়পত্রে সেদেশের সেনা ইনস্টল করেছিল এই আয়রন ডোমটি। ২০০৬-র লেবাননেন যুদ্ধ ও তারপরের সময়ে হেজবোল্লা ও হামাস জঙ্গিদের তরফে ইজরায়েলের উত্তর-প্রান্তে ছোড়া হয়েছিল প্রায় ৪ হাজারের বেশি রকেট। যাতে ৪৪ জন ইজরায়েলি প্রাণ হারিয়েছিলেন, বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল প্রায় আড়াই লক্ষকে। যার পরই দেশের উত্তর-প্রান্তে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে আয়রন ডোম পরিষেবা ইনস্টল করে ইজরায়েল সরকার।
নির্দিষ্ট ট্র্যাকিং রাডার, ব্যাটারির মাধ্যমে বছরের সব সময়তেই কার্যকর থাকে এই আয়রন ডোম। তবে নির্দিষ্ট একটি সহনশীলতা মাত্রা অতিক্রম করলে যার কার্যকারিতা নষ্ট হতে থাকে। কিন্তু আপাতত গাজাকে ঘিরে অশান্ত পরিবেশের মাঝে যে পাল্টা আক্রমণহামাসের পক্ষ থেকে এসেছে, তার অনেকটাই সামলে দিয়েছে আয়রন ডোম। ইজরায়েলের দাবি, তাদের দেশের সীমা লক্ষ করে প্রায় দেড় হাজার রকেট ছোড়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৯০ শতাংশকেই আটকে দিতে সক্ষম হয়েছে আয়রন ডোম।