Puri Jagannath Temple : বিশ্বজোড়া খ্যাতি, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বিগ্রহ কেন অসমাপ্ত ?

সামনেই রথযাত্রা। এর আগে আলোচনা করেছি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রহস্যেমোড়া বিভিন্ন তথ্য নিয়ে। জেনেছি হুগলির মাহেশের বিভিন্ন জনশ্রুতি। আজকের কাহিনি পুরীর মন্দিরের বিগ্রহের ইতিহাস।

Continues below advertisement

পুরী : পুরীর রথযাত্রা। এই উপলক্ষে কার্যত জনসমুদ্র দেখা দেয় পুরীতে। ফি বছর একই ছবি ধরা পড়ে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লক্ষ লক্ষ কৃষ্ণভক্ত শামিল হন। প্রভু জগন্নাথ(শ্রীকৃষ্ণ), তাঁর ভাই বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রাকে ভক্তি অর্পণ করেন ভক্তরা। 

Continues below advertisement

নিমকাঠের তৈরি বিশালাকার রথ টানার জন্য কার্যত জনপ্লাবন দেখা দেয়। এই জগন্নাথ মন্দির ও মন্দিরের বিগ্রহ নিয়ে রয়েছে নানা জনশ্রুতি। কেন অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে এখানকার বিগ্রহ ? এনিয়ে ভক্তদের মনে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু, জানেন কি এর পিছনেও রয়েছে জনশ্রুতি। 

কথিত আছে, সত্যযুগে ইন্দ্রদুম্ন নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি ভগবান বিষ্ণুর ভক্ত ছিলেন। তাঁর উদ্দেশে একটা মন্দির নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন রাজা। যদিও কীভাবে মন্দিরের বিগ্রহ তৈরি করা হবে তা নিয়ে তাঁর কোনও ধারণা ছিল না। তাই তিনি ব্রহ্মার উপদেশ পেতে ধ্যান শুরু করেন। তাঁর ডাকে সাড়া দেন ব্রহ্মা। তিনি রাজাকে উপদেশ দেন, তিনি যেন স্বয়ং বিষ্ণুর উপাসনা হন এবং তাঁর কাছেই উত্তর খোঁজেন। সেইমতো প্রভু বিষ্ণুর জন্য ধ্যান শুরু করেন রাজা। ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁর স্বপ্নে হাজির হন ভগবান বিষ্ণু। তিনি রাজাকে বলেন, বাঁকামোহনায় যেতে। সেখানে গেলে তিনি নিমকাঠের একটি গুঁড়ি পাবেন। এইভাবে রাজা ইঙ্গিত পান যে, তাঁকে বিগ্রহ তৈরি করতে কী ব্যবহার করতে হবে।

বিষ্ণুর স্বপ্নাদেশ পেয়ে ওই জায়গায় রাজা যান নিমগুঁড়ির খোঁজে। যদিও কাকে দিয়ে বিগ্রহ বানানো হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন তিনি। এজন্য একাধিক ভাস্করকে নিয়োগ করেন। কিন্তু, কেউই কাঠ কাটতে পারছিলেন না। কারণ, কাঠ কাটতে গেলেই তাঁদের যন্ত্র ভেঙে যাচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে আর মন্দিরই নির্মাণ করা যাবে না ভেবে চিন্তিত হয়ে পড়েন রাজা। তিনি হতাশ বোধ করছিলেন। সেইসময় হাজির হন ভগবান বিশ্বকর্মা। যাঁকে দেবতাদের মধ্যে স্থপতি বলা হয়। অনন্ত মহারাণা নামে এক শিল্পীর বেশে তিনি রাজার কাছে হাজির হন। 

তিনি একটি শর্তে ভাস্কর্যের কাজ করে দেবেন বলে রাজাকে জানান। তিনি শর্ত দেন, তিনি অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত কাজ চলাকালীন কেউই দরজা খুলতে পারবেন না। এভাবে দিন, মাস, বছর পেরিয়ে গেল। ভিতরে কী চলছে তা জানার জন্য উৎসুক হয়ে পড়েন রাজা। সেই আগ্রহবশে দরজা খুলে ফেলেন তিনি। দরজা খুলে তিনি হতবাক হয়ে যান। দেখেন, জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার অসমাপ্ত বিগ্রহ। তিনি অবাক হয়ে যান, কেন দেবদেবীদের বিগ্রহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। এবং অদ্ভুভাবে, শিল্পীও উধাও ! 

এদিকে বিগ্রহগুলি সম্পূর্ণ না হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েন রাজা ইন্দ্রদুম্ন। তিনি ব্রহ্মার প্রার্থনা শুরু করেন। ব্রহ্মা এসে তাঁকে বলেন, চিন্তা করো না। বিগ্রহগুলি খুবই সুন্দর হয়েছে। এবং প্রভু বিষ্ণু এতে সন্তুষ্ট। ব্রহ্মা আরও জানান, তিনি নিজেই উদ্বোধনী পুজোয় পুরোহিত হিসেবে সভাপতিত্ব করবেন এবং বিষ্ণুর প্রার্থনা করবেন। এভাবে নিজের স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেন রাজা। ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর আশীর্বাদ নিয়ে প্রতিষ্ঠা হয় জগন্নাথ মন্দিরের।  

এর পাশাপাশি ব্রহ্মা ইন্দ্রদুম্নকে জানান, গোটা বিশ্ব থেকে ভক্তরা এই বিগ্রহ দেখতে ছুটে আসবেন। এবং এটা আর্কষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।            

 

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola