কংগ্রেসের ক্রমাগত শক্তিক্ষয়ের প্রসঙ্গে ফের সরব হয়েছেন রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা আজাদ ও দলের আরেক প্রবীণ নেতা কপিল সিব্বল। প্রয়াত সঞ্জয় গাঁধীর জমানা থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত আজাদ বলেছেন, গত বেশ কয়েক দশক দলে কোনও নির্বাচিত কমিটি নেই। হয়তো এজন্য ১০-১৫ বছর আগেই আমাদের দাবি তুলে চাপ দেওয়া উচিত ছিল। এখন আমরা একের পর এক নির্বাচনে হারছি। যদি ক্ষমতায় ফিরতে হয়, তবে সাংগঠনিক নির্বাচন করিয়ে আগে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। তবে আমার দল আগামী ৫০ বছর বিরোধী শিবিরেই থাকতে চাইলে দলের অভ্যন্তরে নির্বাচন করার দরকার নেই। ২০০২ সালে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস সফল হয়েছিল আজাদের নেতৃত্বে। আজ তিনি এও বলেন, যাঁরা ওয়ার্কিং কমিটির নির্বাচনের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা ক্ষমতা হারানোর ভয় পাচ্ছেন, কেননা তাঁরা ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট কার্ডে’র মাধ্যমে পদ পেয়েছেন। যে পদাধিকারীরা বা রাজ্য বা জেলা ব্লক সভাপতিরা আমাদের প্রস্তাবের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা জানেন, ভোট হলে তাঁদের কোথাও ঠাঁই হবে না। যিনিই প্রকৃত অর্থে কংগ্রেসের প্রতি নিবেদিত, আমাদের চিঠিকে স্বাগত জানাবেন। আমি বলেছি, দলের রাজ্য, জেলা, ব্লক সভাপতিদের দলীয় কর্মীদের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের লাভ হল এটাই যে, যখন ভোট হয়, অন্তত দল ৫১ শতাংশ আপনার পাশে আছে। এখন যিনি সভাপতি হচ্ছেন, তাঁর পিছনে এক শতাংশ সমর্থনও না-ই থাকতে পারে। ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা নির্বাচিত হলে তাঁদের সরানো যাবে না। তাহলে সমস্যা কোথায়?
আর সিব্বল একটি সংবাদপত্রকে বলেছেন, চিঠিটা পড়লে বোঝা যাবে, গাঁধী পরিবার সহ কাউকেই খাটো করা তার উদ্দেশ্য নয়। বরঞ্চ আমরা এপর্যন্ত নেতৃত্বের ভূমিকার প্রশংসাই করেছি। কংগ্রেসের ইতিহাসে এমন খারাপ দশা কখনও হয়নি। ২০১৪, ২০১৯ এর ভোটের ফলই সেটা বলছে।
প্রসঙ্গত, সাংসদ, প্রাক্তন মন্ত্রী মিলিয়ে ২৩ জন কংগ্রেস নেতা সনিয়াকে চিঠি দিয়ে দলে আমূল সংস্কার, অবাধ ও সুষ্ঠু অভ্যন্তরীণ নির্বাচন, যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি ও সর্বসময়ের একজন দলীয় সভাপতি থাকার দাবি করেছেন। এই চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসতেই ঝড় ওঠে কংগ্রেসের অন্দরে। সোমবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশ আজাদ সহ চিঠির পিছনে থাকা নেতাদের কাছে জানতে চান, তাঁদের আসল উদ্দেশ্য কী? কেন তাঁরা দলীয় বৈঠকে এসব নিয়ে আলোচনা না করে চিঠি লিখতে গেলেন?