নয়াদিল্লি: ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসকদের মধ্যে অন্যতম তিনি। আজ তাঁর ১৬০ তম জন্মদিবস। আর এই বিশেষ দিন উপলক্ষ্যে ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাল গুগল। এদিন গুগলের পক্ষ থেকে ডুডল তৈরি করা হয়।
১৮৬১ সালে ১৮ জুলাই জন্ম হয় কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ১৮৮৪ সালে ভর্তি হন তিনি। সেই সময় ডাক্তারি পড়ার চল ছিল শুধুমাত্র পুরুষদেরই। প্রথম মহিলা হিসেবে ডাক্তারি পড়ার সিদ্ধান্ত ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলায় নতুন নজির সৃষ্টি করেছিল। কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের সমসাময়িক ছিলেন মুম্বইয়ের বাসিন্দা আরেক মহিলা চিকিৎসক আনন্দবাই যোশী। দেশের মধ্যে কে প্রথম মহিলা চিকিৎসক তা নিয়ে অবশ্য একাধিক বিতর্কও রয়েছে। দুজনই এক বছর ডাক্তারি পাশ করেছিলেন। ১৮৮৬ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি ডিগ্রি লাভ করেন কাদম্বিনী। অন্যদিকে আনন্দবাই যোশী আমেরিকা থেকে ডাক্তারি ডিগ্রি অর্জন করেন ওই একই বছর। কিন্তু মাত্র ২১ বছর বয়সে ১৮৭১ সালে মৃত্যু হয় আনন্দবাইয়ের।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে সেই সময় মহিলা চিকিৎসক হওয়া মোটেও সহজ কথা ছিল না। সব বাধাকে পেরিয়ে নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকেছিলেন কাদম্বিনী। তিনি ছিলেন দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী। কাদম্বিনী লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ মুগ্ধ করেছিল তাঁকে। স্বামীর সাহায্যেই ডাক্তারি পড়া শেষ করে মহিলাদের রোগ নিয়ে ডাক্তারি শুরু করেছিলেন কাদম্বিনী। প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ইউরোপিয়ান মেডিসিনে। জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে প্রথম মহিলা হিসেবেও উপস্থিত ছিলেন তিনি। ১৮৯২ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি গিয়েছিলেন ব্রিটেনে। উচ্চ শিক্ষা শেষে ফিরে আসেন কলকাতাতেই। বাংলার মহিলাদের চিকিৎসা শুরু করেন। মহিলা রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে যোগ দেন লেডি ডাফরিন হাসপাতালে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ওই হাসপাতালেই চিকিৎসক ছিলেন তিন। ১৯২৩ সালে ৩ অক্টোবর মৃত্যু হয় কাদম্বিনীর।
গুগলের এই ডুডল তৈরি করেছিলেন বেঙ্গালুরুর শিল্পী অদ্রিজা। তিনি বলেন, বাঙালিদের জন্য অত্যন্ত গর্বের দিন। কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় ভারতের চিকিৎসা পরিকাঠামোয় অনেক বড় অবদান রেখে গিয়েছেন। যা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।