কলকাতা: 'মৃত' সেজে হাতিয়েছিল সরকারি টাকা, বোন পেয়েছিলেন সরকারি চাকরিও। এমনই অভিযোগ উঠল জোড়াবাগানের এক পরিবারের বিরুদ্ধে। ২০১০-এ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে একজন জীবিত! ডিএনএ-র নকল রিপোর্ট জমা দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠল তার বিরুদ্ধে। ঘটনায় সিবিআই-এর হাতে আটক অভিযুক্ত অমৃতাভ চৌধুরী ও তাঁর বাবা।


জানা গিয়েছে, জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতদের তালিকায় নাম ছিল অমৃতাভ চৌধুরীর। দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেয় সরকার। ছেলের মৃত্যুর ভুয়ো রিপোর্ট দেখিয়ে সরকারের কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন অমৃতাভর বাবা মিহির ও মা অর্চনা।  ডিএনএ স্যাম্পেল ম্যাচ করায় সরকারি চাকরি পান অমৃতাভর বোন। সূত্রের খবর, বিমা সংস্থার এজেন্টও জড়িত রয়েছেন এই চক্রান্তে। মৃত দেখিয়ে জীবনবিমার টাকাও নিয়েছেন অমৃতাভ। 


২০১০ সালের ২৭ মে গভীর রাত, ঝাড়গ্রামের সর্ডিহার রাজাবাঁধ এলাকায় লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় মুম্বইগামী আপ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস। ওই সময়ে ডাউন লাইনে উল্টোদিক থেকে আসা একটি মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে হয় এক্সপ্রেস ট্রেনটির। 


ঘটনায় শতাধিক যাত্রী আহত হন। মৃত্যু হয় জ্ঞানেশ্বরীর ১৪৮ জন যাত্রীর। আর সেই তালিকাতেই নাম ছিল অমৃতাভর। মালগাড়ির চালকও নিহত হন। অভিযোগ, মাওবাদীদের মদতপুষ্ট জ‌নসাধারণের কমিটির সদস্যরা আপ লাইনের প্যানড্রোল ক্লিপ ও ফিসপ্লেট খুলে দেওয়াতেই এই দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস।


দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিজনদের চাকরির আশ্বাস দিয়েছিল রেল। জানানো হয়েছিল চাকরির জন্য মৃত্যুর শংসাপত্র–সহ আবেদন করতে হবে। সেই মতোই আবেদন করে অমৃতাভ চৌধুরীর পরিবার। পাশাপাশি ডিএনএ রিপোর্ট মিলবে এমন একজনকে চাকরিও দেওয়া প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় সরকারের তরফে। 


উল্লেখ্য গত শুক্রবার জোড়াবাগানের বাড়ি থেকে অমৃতাভকে আটক করেছে সিবিআই। জেরায় তিনি জানিয়েছেন, মৃত ব্যক্তি আর তিনি এক নন, তালিকায় রয়েছে আরও অনেকেই। অন্যদিকে অমৃতাভর বাবা স্বীকার করেছেন, ধৃত ব্যক্তিই তাঁর ছেলে। অমৃতাভর পরিচয় নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই তাঁকে গ্রেফতার করবে সিবিআই।