অভিজিত্‍ চৌধুরী, পূর্ণেন্দু সিংহ ও কমলকৃষ্ণ দে, মালদা: সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মালদার মানিকচকে বসল হাট। খবর পেয়ে কড়া পদক্ষেপ পুলিশের।  চলে লাঠি, চড়-থাপ্পড়।  বন্ধ করে দেওয়া হয় হাট।  মালদার ব্যবসায়ী সমিতি পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ির অভিযোগ করলেও তা মানতে নারাজ পুলিশ সুপার। পুলিশের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।


বিধি অমান্য করায় কারও গায়ে পড়ল লাঠির ঘা। কারও কপালে জুটল চড়। কারও আবার অন্য শাস্তি! কান ধরে ওঠবোস করানোও হল কাউকে কাউকে। করোনা পরিস্থিতি যখন উদ্বেগজনক, তখন সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাট বসানোর জেরে শনিবার এমনই সব ছবি দেখা গেল মালদায়।


রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে ১৪ লক্ষের দিকে।১৫ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মারণ এই ভাইরাস। সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে রাজ্যে ১৬ মে থেকে ৩০শে মে পর্যন্ত কার্যত লকডাউন জারি করে রাজ্য সরকার। পরে বিধিনিষেধের সময়সীমা বাড়িয়ে ১৫ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।


এই প্রেক্ষাপটে বিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল পুলিশ। মানিকচকের মথুরাপুরে ফি শনিবার বড় হাট বসে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ যখন চোখ রাঙাচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে গত ১৬ মে মানিকচক ব্লক অফিস থেকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী ৩ সপ্তাহের জন্য হাট বন্ধ থাকবে।কিন্তু শনিবার সকাল ১০টার পর দেখা যায়, মথুরাপুরের বিএসএস হাইস্কুলের পাশে হাট বসেছে। সবজি থেকে পোশাক, চলছে হরেক জিনিসপত্রের বেচাকেনা।


এরপরই কড়া পদক্ষেপ করে পুলিশ।  পুলিশ সক্রিয় হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই হাট উঠে যায়। মালদা  মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক অবশ্য বলেছেন,  ব্যবসায়ীরা হাটের জায়গায় বসেছিলে ঠিকই।কিন্তু বাজারে জল জমে যাওয়ার কারণে হাটের জমিতে বসেছিলেন। কিন্তু পুলিশ আচমকা সেখানে গিয়ে লাঠি চালিয়েছে। আমরা এসপি-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানাচ্ছি। 


বাসিন্দারা অবশ্য পুলিশের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছেন, কার্যত লকডাউনের যে বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে, তা সবার মেনে চলা উচিত। এতবড় হাট বসে যাবে, এটা ঠিক নয়। করোনার চেন ভাঙতে হবে। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে।


 এ প্রসঙ্গে মালদার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন,  পুলিশ নিয়ম মেনেই কাজ করছে। তারপও যদি কেউ অভিযোগ করে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।


অন্যদিকে বর্ধমান শহরে এদিন সকাল ১০টার পরেও রাস্তায় ভিড় করায় অভিযান চালায় পুলিশ। বাঁকুড়ার মাচানতলায় সরকারি নিয়ম না মানার অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়।