নয়াদিল্লি: রাত পোহালেই ৫ সেপ্টেম্বর। দেশ জুড়ে এই দিনটিতে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালিত হয় ডা. সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন। তিনি একজন শিক্ষকের পাশাপাশি ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ছিলেন।


ডা. সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিনের প্রাক্কালে তাঁর সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।


ডা. রাধাকৃষ্ণন জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, তামিলনাড়ুর তিরুত্তনি নামক এক শহরে। তিনি বড় হয়ে শিক্ষকতায় যোগদান করেন। ক্রমেই তিনি তাঁর শিক্ষকতার জোরে এবং ভাল মানুষ হিসেবে পড়ুয়াদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন। যখন তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে নিযুক্ত হন, তখন তাঁর কয়েকজন ছাত্র তাঁর জন্মদিন উদযাপনের আবেদন জানান। সেই সময় ডা. রাধাকৃষ্ণন বলেছিলেন, যদি তাঁর জন্মদিন 'শিক্ষক দিবস' হিসেবে পালিত হয় তাহলে তিনি খুবই গর্ববোধ করবেন। 


ডা. সর্বপল্লি রাধাকৃ্ষ্ণন ১৯৫২ - ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৯৬২ - ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব সামলান। 


গোটা ছাত্রজীবনে তিনি একাধিক স্কলারশিপ পেয়েছেন। তিনি প্রথমে ভেলোরের এক কলেজে ভর্তি হলেও ১৭ বছর বয়সে মাদ্রাজ খ্রিষ্টান কলেজে চলে যান। ১৯০৬ সালে দর্শনে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন এবং শিক্ষকতায় যোগদান করেন।


১৯৩১ সালে ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া 'নাইট ব্যাচেলর' উপাধি পান এবং সেই থেকে স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত তাঁকে 'স্যার' সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণন নামে ডাকা হত। স্বাধীনতার পর তাঁকে ডা. সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণন বলা হয়। 


১৯৪৬ সালে তিনি গণপরিষদে নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘকাল ইউনেসকো (UNESCO) এবং পরবর্তীকালে মসকোর প্রতিনিধি (ambassador) হিসাবে কাজ করেছেন। 


১৯৫৪ সালে 'ভারত রত্ন', ১৯৬১ সালে জার্মান বুক ট্রেডের 'শান্তি পুরস্কার' পান। ১৯৬৩ সালে তিনি 'অর্ডার অফ মেরিট' এবং ১৯৭৫ সালে 'দ্য টেম্প্লেটন প্রাইজ' পান। যদিও পুরস্কারের সম্পূর্ণ অর্থটাই তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করে দেন। 


এছাড়া ১৯৩১ থেকে ১৯৩৭ পর্যন্ত তিনি অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব সামলান। ১৯৫৩ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব সামলেছেন। 


ডা. রাধাকৃষ্ণনের স্মৃতিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ ও অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। তিনি 'হেল্পেজ ইন্ডিয়া' একটি সমাজসেবী সংস্থা গড়ে তোলেন। এমনকী তিনি যখন দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, তখন তাঁর ১০ হাজার টাকা বেতনের মাত্র ২৫০০ টাকা তিনি নিতেন। বাকি গোটা টাকাটাই প্রত্যেক মাসে জমা হত 'প্রাইম মিনিস্টারস ন্যাশনাল রিলিফ ফান্ড'-এ। ১৯৭৫ সালের ১৭ এপ্রিল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহান ব্যক্তিত্ব। 


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI