শিমলা : মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর পরিণতি হিমাচলপ্রদেশে। তবে, সবথেকে খারাপ অবস্থা হল একটি গ্রামের। কার্যত বিলুপ্ত হয়ে গেল গোটা গ্রাম ! এই বিপর্যয়ের মধ্যেই ভয়াবহ সেই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন সামেজ গ্রামের অনিতা দেবী।
সামেজ গ্রামেরই বাসিন্দা অনিতা দেবী। নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বললেন, "বুধবার রাতে সপরিবারে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ বিভৎস একটা আওয়াজ সব নাড়িয়ে দিল। যখন বাইরে তাকালাম দেখি, পুরো গ্রাম ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে ! ভয়ে আমরা ভগবতী কালীমাতার মন্দিরে চলে যাই। গোটা রাত সেখানেই কাটাই।" কথাগুলি বলতে বলতে আতঙ্কে কেঁপে উঠছিলেন তিনি।
অনিতা বলেন, "এই ধ্বংসলীলা থেকে শুধু আমাদের বাড়িটাই বেঁচে গেছে। আর বাকি সবকিছু আমার চোখের সামনে দিয়েই ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেল। জানি না, এখন কার সঙ্গে থাকব।"
চোখে জল বক্সি রাম নামেই সামেজ গ্রামের বয়স্ক এক ব্যক্তির। ঘটনার সময় অন্যত্র ছিলেন তিনি। তাই, বরাতজোরে প্রাণে রক্ষে! তিনি বলেন, "আমার পরিবারে ১৪-১৫ জন সদস্য ছিলেন, বন্যায় সবাই ভেসে গেছে। রাত ২টো নাগাদ বন্যার খবর ভাই। সেই সময় রামপুর গ্রামে ছিলাম। তাই, বেঁচে গেছি। ভোর ৪টের সময় যখন পৌঁছলাম, সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। এখন আমি আমার প্রিয়জনদের খুঁজছি। আশা করছি, কেউ তো বেঁচে থাকবে।"
মেঘভাঙা বৃষ্টির পর হড়পা বান। জোড়া ফলায় কার্যত ধ্বংসাত্মক চেহারা নিয়েছে হিমাচলপ্রদেশের কুলু, মানালি ও শিমলা । শনিবার পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ৫৩ জন নিখোঁজ। ৬টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এমনই জানাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার পর উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে সৃষ্টি হড়পাবানে রামপুর ও সামেজ এলাকার মধ্যে সংযোগকারী রাস্তার কার্যত কোনও অবশিষ্ট নেই। হিমাচলপ্রদেশের স্টেট এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে মাণ্ডিতে সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। সেখানে ৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এরপরেই রয়েছে কুলু। সেখানেও একজন মৃত। যদিও শিমলায় প্রাণহানির কোনও খবর নেই। তবে, শিমলাতেই নিখোঁজের সংখ্যা সবথেকে বেশি। এখানকার এখনও পর্যন্ত ৩৩ জন নিখোঁজ। এরপরে রয়েছে কুলু ও মাণ্ডি। এই দুই জায়গা থেকে যথাক্রমে ৯ জন ও ৬ জন নিখোঁজ।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।