নয়াদিল্লি: দেশভাগের পর থেকেই অস্তিত্ব নিয়ে সঙ্কট দেখা গিয়েছিল। একটু একটু করে শীর্ণকায় হতে শুরু করেছিল। এবার পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অবস্থিত ঐতিহাসিক হিন্দু মন্দিরটি ভেঙে ফেলা হল। ওই মন্দিরের জায়গায় ইতিমধ্যেই নয়া নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর। (Khyber Temple Demolished)


পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে, পাকিস্তান-আফগান সীমান্ত শহর লান্দি কোটাল বাজারে অবস্থিত ছিল ওই মন্দিরটি। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর মন্দিরের আসল দাবিদাররা ভারতে চলে আসেন। সেই থেকে বন্ধ পড়েছিল মন্দিরটি। যত সময় এগিয়েছে, শীর্ণকায় হতে থেকেছে। কার্যত উবে যেতে থেকেছে ইঁটের গাঁথনি। (Hindu Temple Demolished in Pakistan)


কিন্তু অতি সম্প্রতি মন্দিরটিকে একেবারে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। গত ১০-১৫ দিনে ওই মন্দিরের জায়গায় নয়া নির্মাণও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এ নিয়ে একাধিক যুক্তি উঠে এসেছে। মন্দির ভাঙার কথা জানেন না বলে দাবি করেছেন কেউ কেউ, আবার কারও কারও দাবি, নিয়ম অনুযায়ীই ভাঙা হয়েছে মন্দিরটি।


আরও পড়ুন: Iran Israel Conflict : ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইজরায়েলে হামলা চালাতে পারে ইরান ? ভারতীয়দের এই পরামর্শ দিল বিদেশমন্ত্রক


পাক সাংবাদিক ইব্রাহিং শিনওয়ারি জানিয়েছেন, লান্দি কোটাল বাজারের একেবারে মধ্যিখানে অবস্থিত ছিল মন্দিরটি। ১৯৪৭ সালে হিন্দু পরিবারগুলি ভারতে চলে যাওয়ার পর থেকে বন্ধ পড়েছিল। ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ওই মন্দিরের উপরও আঘাত নেমে আসে। সেই থেকেই ক্রমশ শীর্ণকায় হচ্ছিল মন্দিরটি।


পাকিস্তানের হিন্দু মন্দির ম্যানেজমেন্ট কমিটির দায়িত্বে থাকা হারুন সর্বদিয়াল জানিয়েছেন, মন্দির ভাঙার দায় জেলা প্রশাসনের ঘাড়েই বর্তায়। সরকারের দায়িত্ব ছিল ওই মন্দিরটিকে রক্ষা করা। কারণ ধর্মীয় এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে এমন সৌধগুলিকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব সরকারেরই। হারুন জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে দেশে যে প্রাচীন সৌধ নির্মাণ আইন চালু হয়, তার আওতায় মন্দিরটির রক্ষা পাওয়ার কথা ছিল।


পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম Dawn-ও খাইবারের ওই মন্দিরটি ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে খবর করেছে। লান্দি কোটালর অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার মহম্মদ ইরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। কিন্তু মন্দির ভাঙার বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে জানান মহম্মদ। পাশাপাশি, সরকারি নথিতে খাইবার উপজাতি জেলায় ওই মন্দিরের কোনও রেকর্ড নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, যে জায়গায় মন্দিরটি ছিল, সেটি সরকারের সম্পত্তি। লান্দি কোটা এলাকায় পুরনো দোকানগুলিকে ভেঙে কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।