সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, পাণ্ডুয়া : সাপের কামড়ে মৃত সেই নাবালিকার বাড়িতে গেলেন পান্ডুয়া ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। কথা বললেন মৃত নাবালিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। প্রশাসনিক ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন পাণ্ডুয়ার বিডিও সাথী চক্রবর্তী,পাণ্ডুয়া থানার ওসি অর্ণব গঙ্গোপাধ্যায় ও পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। 


তাঁরা পরিবারের সদস্যদের বোঝান, কুসংস্কারে না থেকে সচেতন হতে। গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক বলেন, তাঁরা সময়মতো হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে কিছু সচেতনতার অভাবে এমনটা হয়েছে। তাঁরা সচেতন আছেন। তবে সরকারিভাবে সচেতনতা আরও বাড়ানো হবে। সেই কারণেই আসা।


গত বুধবার সাপে কামড়ায় এলাকার রাজু সরেনের মেয়েকে। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সে। কিন্তু কখন তাকে সাপে কামড়েছিল তা জানতে পারেনি কেউই। খন্যান মুলটি গ্রামে তাদের বাড়ি। সাপের বিষে কাবু হয়ে বাড়িতে লুটিয়ে পড়ে ৯ বছরের মেয়েটি। এরপরই তাকে খন্যান প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। দু'দিন সেখানে ভর্তি থাকার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় বন্ডে সই করে বাড়ি নিয়ে চলে যায় মৃতার পরিবার। জিরাটের এক কবিরাজের থেকে ওষুধ নিয়ে এসে খাওয়ানো হয়। 


মৃতার বাবা রাজু সরেন জানান, তারপর মেয়ে ভালই ছিল। খাওয়া দাওয়া করে খেলা করছিল। শুক্রবার অবস্থার আবার অবনতি হয়। কালনা বেলতলায় ওঝার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঝাড়ফুঁক করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে। শনিবার রাতে মেয়ের মৃত্যু হয়। এরপর খন্যান স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিৎসকরা মৃত বলে জানিয়ে দেন। মৃতদেহ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়।


কিন্তু এরপর বাড়িতে নিয়ে এসে সেলাইন দেওয়া হয় মৃত্যুর পরেও। মৃতদেহ বাড়িতে রেখে ওঝার থেকে ওষুধ নিয়ে এসে তুকতাক চলতে থাকে। রবিবার বর্ধমানের রসুলপুরে ওঝার সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃতার পরিবার। সেখান থেকেও ওষুধ নিয়ে আসা হয়। এতদিন এভাবে থাকার ফলে মৃতদেহে পচন ধরে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ মৃত ছাত্রীর বাড়িতে যায়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় চুঁচুড়ায়।