কলকাতা: আইএএস পরীক্ষাকে বলা হয় দেশের সব থেকে কঠিন পরীক্ষা। দিন রাত খেটে প্রস্তুতি নিলেও সব সময় যে আশাপ্রদ ফল মেলে এমনটা নয়। তাই এমন পরীক্ষার্থীরাও থাকেন, যাঁরা চাকরি করতে করতেই পরীক্ষায় বসার জন্য তৈরি হতে থাকেন। অনেক সময় তা নিজের ইচ্ছে, আবার অনেক সময় বাধ্যবাধকতা। এখন কথা হল, যে পরীক্ষার জন্য দিন রাত এক করে খাটাখাটনি করলেও অনেক সময় সাফল্য আসে না, চাকরির ঝামেলা সামলে কী করে তার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব? দেখে নিন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যাতে হাতে সময় কম থাকলেও আইএএসের জন্য ঠিকমত প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।

তৈরি করে ফেলুন টাইম টেবিল

যাঁরা চাকরির পাশাপাশি আইএএসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের পক্ষে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সঠিক ব্যবহার। গোটা দিন কাজ অনুযায়ী ভাগ করে নিন, কোনওভাবেই টাইম টেবিল থেকে সরে আসবেন না। কয়েক বছরের জন্য বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, পার্টি বিয়ের নেমন্তন্ন- সব ভুলে যান। চাকরির পর যেটুকু সময় হাতে আছে, সবটুকু লাগিয়ে দিন আইএএসের প্রস্তুতিতে।

তৈরি করুন পড়াশোনার টাইমটেবিল

কোন বিষয়ের কোন অধ্যায়ে কতটা সময় দেবেন, সব কিছু চূড়ান্ত করুন টাইম টেবিলে। বড় বিষয়কে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে পড়ুন। তাতে সময়মত শেষ করতে পারবেন, আত্মবিশ্বাস বাড়বে। পড়াশোনার রুটিন অত্যন্ত সাবধানে তৈরি করুন, আপনার জন্য প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনও অভিজ্ঞ শিক্ষক বা এই পরীক্ষা পাশ করেছেন এমন কারও সাহায্য নিন। কী করতে হবে, কী হবে না তিনি ঠিকমত বলতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, সকলের ক্ষমতা ও জীবনযাপনের ধরন এক নয়। তাই সাহায্য নিলেও নিজের পরিস্থিতি বুঝে তৈরি করুন রুটিন।

কাজ করুন বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে

অল্প সময়ে বেশি পড়ার জন্য বুদ্ধি খাটাতে হবে। আইএএসের কোর্স বিশাল বড়। ঠিকমত তা বিশ্লেষণ করুন, গত কয়েক বছরের প্রশ্নপত্র ঘেঁটে বুঝে নিন, কোন বিষয়গুলি বেশি জরুরি। এই সব বিষয় পুরোপুরি তৈরি করতে ঠিক কতটা সময় লাগবে তাও বুঝে নিন। যদি দেখেন এমন বিষয় আছে, আপনি জানেন, যার পিছনে পরিশ্রম এবং সময় দিলেও তা পুরোপুরি আয়ত্ত্ব হবে না, তবে তা ছেড়ে দিন। যে বিষয় বুঝতে পারবেন তাতে জোর দিন। আইএএসের মত পরীক্ষায় সিলেক্টিভ স্টাডির খুব বেশি সুযোগ নেই কিন্তু যাঁরা সারাক্ষণ পড়াশোনা করেন তাঁরাও কিছু বিষয় তো ছেড়েই দেন।

অফিস যেন বাড়ির কাছাকাছি হয়   

সম্ভব হলে অফিসের কাছাকাছি বাড়ি ভাড়া করুন। যাতায়াতে সময় যতটা কম দেওয়া সম্ভব তা দেখতে হবে। বাসে ট্রেনে বসে পড়াশোনা খুব ভাল হয় না, তাই উপায় থাকলে সে চেষ্টা করবেন না। বাসে ট্রেনে সফরের সময় বই এত নড়তে থাকে যে চোখের ওপর চাপ পড়ে। ফলে বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। এই সময়টা অন্যভাবে ব্যয় করুন, খবর, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স যা পারেন, অডিও ক্লিপে শুনতে থাকুন।

বিরতিটুকুও ব্যবহার করুন  

কেউ তো আর পুরো ৮ ঘণ্টা টানা কাজ করে না। লাঞ্চ ছাড়াও আরও কিছুটা বিরতি প্রত্যেকে নেয়। এই সময়টা খবরের কাগজ বা পত্রপত্রিকা পড়ুন, যাতে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স সম্পর্কে জানতে পারেন। এই সব পড়ার জন্য তো খুব বেশি মনোযোগ লাগে না, ফাঁকা জায়গাও দরকার নেই। কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ বুলিয়ে নিন আজকের খবরে।

ইতিবাচক চিন্তা করুন

এমন জীবনচর্যা সকলের পক্ষের সম্ভব নয়। বহুবার মনে হবে, রোবট হয়ে যাচ্ছি না তো? তখন মনের জোর ধরে রাখা মুশকিল হয়। নিজেকে বোঝান, এই জীবন আপনিই বেছে নিয়েছেন, আপনার নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য আছে। সকলের স্বপ্ন আপনার মত নয়, সুতরাং আপনার জীবনযাত্রাও অন্যরকম। নিজেকে বোঝান, আপনি এক সময় দেশ চালানোর দায়িত্ব পাবেন। সে জন্য এ টুকু পরিশ্রম তো করতেই হবে।

Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI