নয়াদিল্লি: গত ২ মাসে ভারতে সংক্রমণ ছড়াতে ছড়াতে নোভেল করোনাভাইরাসের মধ্যে কোনওপ্রকার বিবর্তন ঘটেছে কি না, তা জানতে নতুন গবেষণা শুরু করতে চলেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।


দেশের প্রথম সারির স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের এক শীর্ষ বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ভারতে সার্স-সিওভি২ ভাইরাসের মধ্যে কোনও বিবর্তন ঘটেছে কি না তা জানতে পারলে সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ও ক্ষমতা দ্রুত নির্ণয় করা যাবে। পাশাপাশি, এ-ও বোঝা যাবে, ভাইরাসের আরও বিপজ্জনক হয়েছে কি না বা তার সংক্রমণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে কি না। হলেও, কতটা হয়েছে।


তিনি যোগ করেন, কোভিড-১৯ রোগীদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করেই এই গবেষণা চালানো হবে। যদিও, ওই বিজ্ঞানীর মতে, লকডাউন উঠলে তবেই এই গবেষণা শুরু করা সম্ভব। কারণ, এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নমুনা সংগ্রহ করা হলেও, তা মূল গবেষণাকেন্দ্রে এসে পৌঁছতে পারছে না।


গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিসেড) এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ভারতে প্রাপ্ত করোনাভাইরাসের প্রজাতির সঙ্গে বিদেশের করোনভাইরাসের প্রজাতির তফাত ০.২ থেকে ০.৯ শতাংশ। জিসেড-এর কাছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংগ্রহীত সার্স-সিওভি২ ভাইরাসের প্রায় ৭ হাজার সম্পূর্ণ জিনোম সিক্যোয়েন্স রয়েছে।


বিজ্ঞানীদের মতে, বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতে আসা পর্যটক বা দেশবাসীরা নিজেদের শরীরে বিভিন্ন প্রজাতির ভাইরাস বহন করে এনেছেন। এখনও পর্যন্ত ভারতে তিন প্রজাতির করোনাভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। একটি উহানের এবং অপর দুটি ইতালি ও ইরানের।


তবে, আইসিএমআর-এর অধিকর্তা জানান, ভাইরাসে বিবর্তন এলেও, ভ্যাকসিন যে অকৃতকার্য প্রমাণিত হবে, তেমনটা নয়। কারণ, ভারতে যে তিন প্রজাতির ভাইরাস রয়েছে, তাদের প্রত্যেকের এঞ্জাইম এক। তাছাড়া, ভারতে ভাইরাসটি মাত্র তিন মাস এসেছে। এত তাড়াতাড়ি বিবর্তনের ক্ষমতাও নেই।


বিজ্ঞানীদের মতে, করোনাভাইরাসের কোন অর্ধ-প্রজাতি ভারতে প্রধান সংক্রমণ ঘটাচ্ছে, তা জানতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। প্রসঙ্গত, ৬টি ভারতীয় সংস্থা করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করার চেষ্টায় রয়েছে। এছাড়া, বিশ্বের একাধিক দেশে চলছে স্বাধীন গবেষণা চলছে। তবে, ভ্যাকসিন এখনই বের হলে আগামী বছরের আগে তা ব্যবহারযোগ্য হবে বলে মনে করছেন না বিজ্ঞানীমহল।