হায়দরাবাদ: হায়দরাবাদের পশু চিকিত্সকের গণধর্ষণ, হত্যা ও দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রথম মুখ খুলে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এ ব্যাপারে ফাস্ট ট্রাক কোর্টে বিচার হবে বলে জানালেন। ২৭-২৮ নভেম্বরের মধ্যরাতের বিভীষিকাময় ঘটনার পর প্রবল চাপ রয়েছে তাঁর ওপর। রবিবার ওই ‘নারকীয় নৃশংসতা’য় ‘গভীর উষ্মা’ প্রকাশ করে কেসিআর তাঁর সরকার নির্যাতিতার পরিবারকে সব প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে তৈরি বলে জানান। বলেন, ফাস্ট ট্রাক কোর্টে শুনানি হবে, যাতে দ্রুত সুবিচার মেলে, তাও সুনিশ্চিত করা হচ্ছে।
ধর্ষণকারীদের যাতে মৃত্যুদণ্ড হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য দেরি না করে আইন সংশোধন করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আবেদন করেছেন কেসিআরের পু্ত্র কে টি রাম রাও।
২৭ বছরের তরুণী ডাক্তারের মর্মান্তিক পরিণতির কথা জানাজানি হতেই হায়দরাবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়। দ্রুত মৃত তরুণীর পক্ষে সুবিচারের দাবিতে প্রতিবাদী জনতা রাস্তায় নেমে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর, চপ্পল ছুঁড়ে মারা হয়। বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদের কাছে শাদনগরে ওই ডাক্তারের দগ্ধ দেহ খুঁজে পাওয়া যায়। চার অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পাশাপাশি তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে তরুণীর বোনের অভিযোগ নিতে গড়িমসির অভিযোগে।
রবিবার প্রয়াত ডাক্তারের পরিবারের বাড়ির সামনে উত্তেজনার পরিবেশ ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা হায়দরাবাদের উপকন্ঠে ওই এলাকায় ঢোকার মুখে একটি বোর্ড টানিয়ে দেন, যাতে লেখা রয়েছে, সহানুভূতি চাই না, উপযুক্ত ব্যবস্থা, ন্যয়বিচার লাগবে। এলাকায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় রাজনীতিকদের, পুলিশ ও মিডিয়ার লোকজনকে। গেটে তালা মেরে দেন বাসিন্দারা।
২০১২-র দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডের পরপরও নারী ধর্ষণে বিরাম নেই দেশে। নির্ভয়ার গণধর্ষণ, হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষে তাঁর মৃত্যুতে বেনজির শোক, ক্রোধ উথলে উঠেছিল রাজধানী শহর সহ সারা দেশে। হায়দরাবাদের ঘটনায়ও সোস্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরা। ট্যুইটারে ট্রেন্ডিং হয়েছে #HangRapists হ্যাশট্যাগ।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। অভিযোগ, তিনি ঘটনার দুদিন বাদে রবিবার নিজের দল তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (টিআরএস) বিধায়ক রেখা নায়েকের মেয়ের বিয়ের আসরে হাজির হয়ে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করেন। যান তাঁর দলের আরও নেতা-মন্ত্রীরা। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে একটিবার দেখা না করে কেন তিনি হাইপ্রোফাইল বিয়েতে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে নির্যাতিতার পরিবারকে ন্যয়বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে, দাবি করেছে বিক্ষোভকারীরা।