ইসলামাবাদ : পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেফতার । তোশাখানা মামলায় তাঁকে পাকিস্তানের আদালত তিন বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আজ। শুধু তা-ই নয়, আগামী পাঁচ বছর সক্রিয় রাজনীতিতে থাকতে পারবেন না পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, এমনই নির্দেশ দিয়েছে ইসলামাবাদের ট্রায়াল কোর্ট। 


বছর ৭০-এর ইমরান খানের ক্রিকেটীয় দক্ষতা বিশ্ববন্দিত। কিন্তু, রাজনীতির মঞ্চে বড়সড় 'ব্যর্থতা'-র মুখে পড়তে হল এই কিংবদন্তিকে। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে থাকাকালীন বিদেশের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে যেসব উপহার পাওয়া গিয়েছিল, তা বেআইনিভাবে ইমরান বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। কোনও উপহার পাকিস্তানের প্রশাসক বা কোনও সরকারি আধিকারিককে দেওয়া হলে তা মন্ত্রিসভার অধীনে থাকা তোশাখানা দফতরে রাখার দস্তুর পাকিস্তানে। কিন্তু অভিযোগ, এইসব উপহারের মধ্যে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী কিছু নিয়ে এসে তা ব্যক্তিগত লাভের জন্য বিক্রি করে দিয়েছেন। সরকারি আধিকারিকদের সূত্রে খবর, ওই উপহার তালিকায় রয়েছে- রাজ পরিবারের তরফে দেওয়া ঘড়িও। যে উপহার ইমরানের আত্মীয় দুবাইয়ে বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।  


অর্থাৎ, রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসাবে বিদেশের বিভিন্ন বিশিষ্টদের কাছে পাওয়া উপহার এভাবে বিক্রির অভিযোগ ওঠায় পাকিস্তানের রাজনীতিতে বড়সড় ধাক্কার মুখে পড়েন ইমরান। গত বছর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের অভিযোগের ভিত্তিতে তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় ইমরানকে। একই মামলায় এর আগে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। এর আগে পাকিস্তানের সেসন কোর্ট নির্দেশ দেয়, তোশাখানা মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের আইনি-প্রক্রিয়া বজায় রাখতে। যে রায় একদিন আগেই অবৈধ বলে ঘোষণা করে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। আর তারপর আজ এই রায়দান ট্রায়াল কোর্টের।


আদালত তেহরিক-ই-ইনসাফ সুপ্রিমো ইমরানকে তিন বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি, ১ লক্ষ টাকা জরিমানাও ঘোষণা করেছে। এমনই খবর সেদেশের সংবাদমাধ্যম Dawn সূত্রের। শনিবার এই মামলার শুনানির সময় বিচারকের মন্তব্য উদ্ধৃত করে Dawn বলে, 'ইমরান খান ইচ্ছাকৃতভাবে জাল তথ্য দিয়েছিল পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের কাছে। দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে দোষী পাওয়া গেছে।' তাই, নির্বাচনী আইনের ১৭৪ নম্বর ধারায় তাঁকে তিন বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


গত বছর পাকিস্তান সংসদে আস্থা ভোটে বিরোধীদের কাছে পরাস্ত হন ইমরান খান। তাই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেয়াদ শেষ করতে পারেননি তিনি। যদিও তেহরিক-ই-ইনসাফ সুপ্রিমো অভিযোগ তোলেন, দেশের সামরিক শক্তির সাহায্য নিয়ে এই আস্থা ভোটের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে মিলিটারি।