নয়াদিল্লি: মুখোমুখি সংঘর্ষ হোক বা সুড়ঙ্গ দিয়ে ইজরায়েলে অনুপ্রবেশ, সব কিছুর নেপথ্য়ে বার বার উঠে এসেছে 'হামাস'-এর প্রশিক্ষিত 'নুকবা' টিমের নাম (Hamas Elite Special Military Unit Nukhba Force)। সূত্রের খবর, গত শনিবার ভোরে ইজরায়েলে যে হামলা চলেছিল তার মূল কারিগর ছিল 'নুকবা'-র সদস্যরা। তাদের উপরই ইজরায়েল আক্রমণের (Israel Palestine War) ভার দেয় হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। কিন্তু কেন? বিশ্বের অন্যতম সেরা সেনাবাহিনী, ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের সঙ্গে লড়াই করার জন্য কেন এই 'নুকবা'-র উপর ভরসা করেছিল হামাস?


'নুকবা' সম্পর্কে...
সূত্রের খবর, শীর্ষস্থানীয় হামাস নেতারা নিজের হাতে 'নুকবা'-র সদস্যদের বেছে নেয়। 'নুকবা' বাহিনী একদিকে যেমন ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র চালাতে সক্ষম, অন্য দিকে সে ভাবেই রকেট এবং স্নাইপার রাইফেল ব্যবহারে সড়গড়। শুধু তাই নয়। বর্তমানে এই বাহিনীর 'কমান্ডোরাই' হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বলে ইজরায়েল সূত্রে খবর। আইডিএফ সূত্রে খবর, ২০০৭ সালে গাজার দখল নেওয়ার পর থেকেই সেখানে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শুরু করে হামাস। এখন, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার সময় সেই সুড়ঙ্গই কাজে লাগাচ্ছে তারা। বিশেষত হামাসের 'নুকবা' টিম এখন সুড়ঙ্গগুলিকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করছে। আইডিএফ লাগাতার বোমাবর্ষণ করে গাজা স্ট্রিপ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা সেই সুড়ঙ্গের নেটওয়ার্ক নষ্টের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 


পরিস্থিতি...
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যা পরিসংখ্যান, তাতে আইডিএফের লাগাতার হামলার জেরে গাজায় প্রায় ৪ লক্ষ ২৩ হাজার বাসিন্দা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। নিহতের সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি, জখম ৬ হাজার ৬১২। ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং জেরুজালেমের অবস্থাও ভাল নয়। ৩৬ জন মারা গিয়েছেন সেখানে, জখম সাড়ে ছ'শো জন। বৃহস্পতিবার রাতভর আকাশপথে অন্তত ৩০টি হামলা চালিয়েছে আইডিএফ, যার পর পরিস্থিতি অন্তত শোচনীয়। মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চেষ্টা করছেন, যুদ্ধের আবহে গাজায় আটকে পড়া সাধারণ বাসিন্দারা যাতে নিরাপদে ওই এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারেন। তাঁদের মিশরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা চলছে। কিন্তু বাসিন্দাদের অনেকেরই ভয়, একবার এলাকা ছেড়ে চলে গেলে আর হয়তো ফেরা হবে না। তুমুল বিপদের মুখেও তাই তাঁদের গাজা ছাড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। মুখে স্পষ্ট না মানলেও হেজবোল্লার সম্ভাব্য গতিবিধি চিন্তায় রাখছে ইজরায়েলকেও। কারণ তারা এই যুদ্ধে পুরোদস্তুর অংশ নিলে পশ্চিম এশিয়ার রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে গড়াবে বলা কঠিন। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ইরান-সমর্থিত হেজবোল্লা, হামাসের থেকে সামরিক ভাবে ঢের বেশি শক্তিশালী, ইজরায়েলের যে কোনও অংশে আক্রমণ হানতে সক্ষম। তার উপর ইরানের বিদেশমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, গাজায় বোমাবর্ষণ চলতে থাকলে অন্য ফ্রন্টেও যুদ্ধ করতে হতে পারে ইজরায়েলকে। তিনি কোন দিকে ইঙ্গিত করছেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই আন্তর্জাতিক মহলের। সব মিলিয়ে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি।


আরও পড়ুন:সৌজন্যে 'অপারেশন অজয়', যুদ্ধবিধ্বস্ত ইজরায়েল থেকে প্রথম ধাপে ফিরলেন ২১২ জন ভারতীয়