নয়া দিল্লি: এতদিন গাড়ি চালানোর সময় কিংবা সামনের সিটে বসে সিট বেল্ট (Seat Belt) না পরায় জরিমানা করেছে পুলিশ (Police)। এই নিয়ম আবশ্যক, এই মর্মেই সিট বেল্ট না পরলে টাকা জরিমানা করেছে পুলিশ। কিন্তু এবার দেখা গেল এক ভিন্ন চিত্র। গাড়ির পিছনে সিট বেল্ট ছাড়া বসে থাকায় ১০০০ টাকা জরিমানা করল কর্নাটক (Karnataka) পুলিশ। 


শুধু তাই নয়, মোটর ভেহিকেলস অ্যাক্ট (Motor Vehicles Act) অনুসারে যাতে এই নিয়মকে আবশ্যক করা যায় সেই ভাবনাও রয়েছে। কর্নাটক পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল (রোড সেফটি) আর হীতেন্দ্র এই আদেশের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন এ বিষয়ে, এমনটাই সূত্রের খবর। সেখানে তিনি পুলিশ কমিশনারেট এবং এসপিদের আদেশটি অনুসরণও করতে বলেছেন। সেই নির্দেশে সড়ক পরিবহন মন্ত্রকের জারি করা ১৯ সেপ্টেম্বরের একটি চিঠিও সেখানে উদ্ধৃত করা হয়েছে।  


প্রসঙ্গত, ৪ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রে পালঘরে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সাইরাস মিস্ত্রির। সেই ঘটনার পর থেকেই এবার সিট বেল্ট পরার দিকে নজর আরও বৃদ্ধি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সিট বেল্টের গুরুত্বও বোঝানো হচ্ছে সকলকে। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি।          


আরও পড়ুন, অনশনের ৪৭ ঘণ্টা, ধর্নার ৬৮ ঘণ্টা পার! চাকরির দাবিতে অনশনে অবরুদ্ধ করুণাময়ী


কী ঘটেছিল?


গুজরাতের আমদাবাদ থেকে মুম্বই ফেরার পথে পালঘরে দুর্ঘটনায় পড়ে সাইরাসের গাড়ি। পালঘর জেলায় মুম্বই-আমদাবাদ সড়ক দিয়ে এগনোর সময় সূর্য নদীর উপর একটি সেতুতে ডিভাইডারে ধাক্কা মারে মার্সিডিজ গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাইরাস এবং তাঁর বন্ধু জাহাঙ্গির পান্ডোলের। গাড়িতে ছিলেন দরিয়স পান্ডোলে এবং তাঁর স্ত্রী, বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ আনাহিতা পান্ডোলেও।


গাড়ি চালাচ্ছিলেন আনাহিতা। তাঁরা দু’জনে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির পিছনের আসনে বসেছিলেন সাইরাস এবং জাহাঙ্গির। সিটবেল্ট পরেননি তাঁরা দু’জনেই। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ জানিয়েছে, দুরন্ত গতিতে ছুটছিল গাড়িটি। মাত্র ৯ মিনিটে ২০ কিলোমিটার পথ পেরোয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি ২০১৭-র মার্সিডিজ এসইউভি। তাতে সাতটি এয়ারব্যাগ ছিল। কিন্তু পিছনের আসনে শুধুমাত্র দু’পাশেই এয়ারব্যাগ ছিল। সামনের দিকে ছিল না একটিও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সিটবেল্ট পরে না থাকায়, পিছনের আসন থেকে সামনের দিকে ছিটকে পড়েন সাইরাস। তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।


দুর্ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি গাডি়র পিছনের আসনে বসলেও সিটবেল্ট পরা জরুরি বলে মন্তব্য করেন সোমবার। তিনি বলেন, ‘‘অনেকে ভাবেন, পিছনে বসলে সিটবেল্ট পরার দরকার নেই। ওই দুর্ঘটনা নিয়ে কোও মন্তব্য করতে চাই না। তবে সিটবেল্ট পরার দায় সামনের লোকজনের বলেই মনে করা হয়।কিন্তু গাড়ির সকলেরই সিটবেল্ট পরা উচিত।’’