নয়াদিল্লি: সীমান্ত সংঘাত ঘিরে তলানিতে পৌঁছেছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। তার জেরে ভারতে আয়োজিত জি-২০ সম্মেলনে (G-20 Summit) যোগ দেননি চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। সেই নিয়ে দুই দেশের বোঝাপড়া আরও নষ্ট হবে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে জি-২০ সম্মেলনের সমাপ্তিপর্বে চিনকে কার্যতই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল ভারত। রবিবার সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণার ঠিক আগে ভারতের তরফে লাদাখে বিমানঘাঁটি (Ladakh Airfield) তৈরির ঘোষণা হল সরকারি ভাবে। (India-China Conflict)


কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনকে এই বিমানঘাঁটি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পূর্ব লাদাখের নিয়োমায় পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে উচ্চতম বিমানঘাঁটি গড়ে তুলবে তারা। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর, জম্মুর দেবক সেতু থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রস্তাবিত এই বিমানঘাঁটির শিলান্যাস করবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। খবরে সিলমোহর দিয়েছে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনও।



এখনও পর্যন্ত যে খবর মিলেছে, সেই অনুযায়ী, এই বিমানঘাঁটি তৈরিতে খরচ পড়বে ২১৮ কোটি টাকা। ২০২০ সাল থেকে চিনের সঙ্গে সংঘাত চলাকালীন নিয়োমার সুউচ্চ ল্যান্ডিং গ্রাউন্ডের উপর দিয়েই সৈন্য এবং রসদ সরবরাহ চলে আসছে। সেখানে নিয়মিত ওঠানা করতে দেখা গিয়েছে ভারী ওজন বহনে সক্ষম চিনুক হেলিকপ্টার এবং C-130J যুদ্ধবিমানকে। সেখানেই বিমানঘাঁটি গড়ার সিদ্ধান্ত।


আরও পড়ুন: G20 Summit Live: দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা, শান্তির বার্তা দিলেন মোদি


এই বিমানঘাঁটির নির্মাণ হলে, লাদাখে প্রতিরক্ষা কাঠামো সেনাবাহিনী এবং বায়ুসেনা বল পাবে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। কারণ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩ হাজার ৪০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত নিয়োমা। চিনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে দূরত্ব প্রায় ৪৬ কিলোমিটার। সেখান থেকে চিনের বিরুদ্ধে সামরিক কৌশল রচনা যেমন সহজতর হবে, তেমনই ওই অঞ্চলে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের পথও সুগম হবে বলে মত বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব চৌধরির।


অতি সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বাগডোগরা এবং ব্যারাকপুর বিমানঘাঁটিকেও নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে বিমানঘাঁটি দু’টি। ১২ সেপ্টেম্বর সেগুলিরও উদ্বোধন করবেন রাজনাথ। এই দুই বিমানঘাঁটির পুনর্গঠনে ৫২৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। দেশের উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্তের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই বিমাঘাঁটিগুলিকে নতুন করে সুসজ্জিত করে তোলা হচ্ছে।


তবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি সেরে রাখাই নয় শুধু, সীমান্তে ড্রাগনের গতিবিধির উপর নজরদারি চালাতে যন্ত্রমেধা ব্যবহারেও জোর দিচ্ছে ভারত। পাকিস্তানি সেনার উপর নজর রাখতে জম্মু ও কাশ্মীরের উত্তরে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ড্রোন নামানো করা হয়েছে।  পূর্ব লাদাখেও উচ্চমানের প্রযুক্তিতে তৈরি ড্রোনের ব্যবহার শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নর্দার্ন কমান্ডের চিফ অফ স্টাফ লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল অনিন্দ্য সেনগুপ্ত।