নয়াদিল্লি: চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ২ হাজার ৪০০-র বেশি নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি চুক্তিলঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান, যাতে ১৪ জন ভারতীয় প্রাণ হারিয়েছে। এই নিয়ে নিজেদের তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে প্রতিবেশী দেশকে লিখিত প্রতিবাদ জানাল ভারত।



কেন্দ্রের শীর্ষস্থানীয় এক আধিকারিক জানিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে ২, ৪৩২ বার সংঘর্ষবিরতি চুক্তি ভেঙেছে পাক বাহিনী। ওই হামলায় ১৪ ভারতীয়র প্রাণ গিয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৮৮ জন।

প্রতিবাদ-পত্রে ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তানের এই কার্যকলাপ ২০০৩ সালে স্বাক্ষরিত হওয়া সংঘর্ষবিরতি চুক্তির পরিপন্থী ও তা লঙ্ঘন করেছে। এপারে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশে সাহায্য করতে গুলি চালিয়ে তাদের যেভাবে "কভার" দিয়ে চলেছে পাক বাহিনী, তাতে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত।

প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে ডিজিএমও পর্যায়ের বৈঠকে ভারত বারবার পাকিস্তানকে এসব বন্ধ করতে বলেছে। কিন্তু, পাকিস্তান সেই কার্যকলাপ বন্ধ করেনি। জম্মু ও কাশ্মীরে নাশকতা চালানোর লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রণরেখা দিয়ে এদেশে জঙ্গি অনুপ্রবেশে সাহায্য করার অভিযোগ পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে এনেছে ভারত।

প্রসঙ্গত, মোদি সরকার গত বছর অগাস্ট মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পর থেকেই সীমান্তে গুলিচালনার ঘটনা উত্তুরোত্তর বাড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। এতে দুদেশের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। নিয়ন্ত্রণরেখায় উভয় দেশের বাহিনীর মধ্যে প্রতিনিয়ত গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে চলেছে।

এসবের মধ্যেই, পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনে কর্মরত দুই ভারতীয় কর্মীকে দিনদুপুরে অপহরণ করে পাকিন্তান নিরাপত্তাবাহিনী। তাঁদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। হুমকি দেওয়া হয়। জোর করে স্বীকারোক্তি লিখিয়ে নেওয়া হয়।

জবাবে, নয়াদিল্লির তরফে ইসলামাবাদকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অবিলম্বে এদেশে পাক হাই-কমিশনের কর্মী সংখ্যা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করতে হবে। কারণ, ওই কর্মীরা এদেশে চরবৃত্তি ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদত করছে। একইভাবে, ভারতও পাকিস্তানে নিজেদের হাই কমিশন থেকে প্রায় অর্ধেক কর্মীকে ফিরিয়ে নিয়েছে। গত ৩০ জুন ওয়াঘা-আট্টারি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় কূটনীতিক ও তাঁদের পরিবার ভারতে ফিরে আসেন।

সম্প্রতি, করাচি স্টক এক্সচেঞ্জ বিস্ফোরণের জন্য ভারতকে দায়ী করেন ইমরান খান। এর ফলেও, দুদেশের সম্পর্ক আরও শীতল হয়েছে। পাক প্রধানমন্ত্রীর এই দাবিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে ভারত পাল্টা জানিয়ে দেয়, নিজেদের ঘরোয়া সমস্যার জন্য ভারতকে দায়ী না করতে পারে না পাকিস্তান।