কলকাতা: গতকাল সংঘর্ষবিরতি নিয়ে পোস্ট, আজ ফের পোস্ট মার্কিন প্রেসিডেন্টের। ডোনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, 'ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য বাড়াবে আমেরিকা। দুই দেশের সঙ্গে এমনভাবে কাজ করার চেষ্টা করা হবে যাতে ‘হাজার বছরের’ কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হতে পারে। এক্স হ্যান্ডলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও লেখেন, আগ্রাসন থামানো প্রয়োজন এটা বুঝতে পেরেছে ২ দেশ, এটা তাঁকে গর্বিত করেছে।' ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতি ইস্যুতে ট্রাম্পের পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলল কংগ্রেস ও তৃণমূল।
এক্সহ্যান্ডেলে সরব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। তিনি বলেছেন 'প্রথমে ওয়াশিংটন DC, এরপর ভারত সরকার ও পাকিস্তানের তরফে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা। পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার জন্য যে নিরপেক্ষ জায়গার কথা বলছেন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবি। আমরা কি সিমলা চুক্তি বর্জন করেছি ? তৃতীয়পক্ষের মধ্যস্ততার জন্য দরজা খুলে দিয়েছি ? কী প্রতিশ্রুতি চেয়েছি ও কী পেয়েছি ? আমরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাই।আমরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাই।'
অপরদিকে, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, যাইহোক উনি লিখেছেন, এটা তো ঠিক কথা, আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যুইট দেখেই আমরা বুঝতে পারছি, এটা সেটেলমেন্ট হয়েছে।এটাও ঠিক কথা, ট্রাম্পের ট্যুইটে দেখেই মনে হয়েছে, আমেরিকা ইন্টারফেয়ার করেছে। তারপরে এই সেটেলমেন্ট হয়েছে। ট্রাম্পের একটা ভূমিকা রয়েছে। আমি বিশেষ কমেন্ট এই মুহূর্তে করব না।' এরপরেই অতীতে দেশকে যেসকল হেভিওয়েট নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের কথা বলেন তিনি। কল্যাণের কথায়,' ইন্দিরা গান্ধী থেকে শুরু করে পন্ডিত জহরলাল নেহেরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এবং অটল বিহারী বাজপেয়ীর মত ব্যাক্তিদের আজ আমরা মিস করছি।'
গোটা দেশবাসী যখন পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার দাবিতে ফুঁসছিলেন, ঠিক তখনই সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণা হয়ে গেল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। আর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে, অর্থাৎ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হল ভারত থেকে ১৩ হাজার কিলোমিটার দূরে! আর যিনি যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা করলেন, তিনি আর কেউ নন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এরপরই প্রশ্ন তুলতে শুরু করল বিরোধীরা। পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের নৃশংসভাবে খুনের পর, সীমান্তে টানা সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে সাধারণ মানুষ মারল পাকিস্তান। আর এ নিয়ে সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণা করার ডোনাল্ড ট্রাম্প কে? ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে কেন নাক গলাবে কোনও তৃতীয় পক্ষ? প্রশ্ন বিরোধীদের। এই পরিস্থিতিতে ১৯৭১-এর ভারত-পাক যুদ্ধের কথা স্মরণ ।
প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, 'অভাবটা হচ্ছে ইন্দিরা গান্ধীর মতো একজন নেত্রীর। ১৯৭১ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নিক্সন বলেছিল যুদ্ধ থামাও। ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, না থামাব না আমি। বাংলাদেশকে মুক্ত করে পাকিস্তানকে জব্দ করে তবে যুদ্ধ থামাব। আমাদের শর্তে যুদ্ধ থামাব। ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা ভারতবর্ষের হাতে বন্দি হলে তারপরে যুদ্ধ থেমেছিল। তারপরে সিমলা চুক্তি হয়েছিল। এখন সেই ইন্দিরা গান্ধীও নেই, সেই ভারতও নেই। '