নয়াদিল্লি : ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির কথা গতকাল প্রথম ঘোষণা করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার একদিন পরেই আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। 'অপারেশন সিঁদুর' ও সংঘর্ষবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকার অনুরোধ জানান তিনি। সংঘর্ষবিরতির কথা ট্রাম্প প্রথম ঘোষণা করায় সেই বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।

রাহুল লিখেছেন, "প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, অবিলম্বে সংসদে একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকার জন্য বিরোধী দলের সর্বসম্মত অনুরোধ পুনরায় জানাচ্ছি। জনগণ এবং তাঁদের প্রতিনিধিদের জন্য পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা, অপারেশন সিন্দুর এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প কর্তৃক প্রথম ঘোষিত আজকের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমাদের সামনের চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় সম্মিলিত সংকল্প প্রদর্শনের একটি সুযোগও হবে। আমি বিশ্বাস করি যে, আপনি এই দাবিটি গুরুত্ব সহকারে এবং দ্রুত বিবেচনা করবেন।"

কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। তিনি লিখেছেন, "আপনি হয়ত আমাকে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা হিসাবে স্মরণ করতে পারবেন এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা, পহেলগাঁওয়ে অমানবিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে সংসদের উভয় কক্ষের একটি বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের জন্য ২৮ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে আমাদের চিঠির মাধ্যমে আপনাকে অনুরোধ করেছিলাম। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ইতিমধ্যেই আপনাকে আবার চিঠি লিখে পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাস, অপারেশন সিন্দুর এবং প্রথমে ওয়াশিংটন ডিসি এবং পরে ভারত ও পাকিস্তান সরকারের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা নিয়ে আলোচনা করার জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের জন্য সমস্ত বিরোধী দলের সর্বসম্মত অনুরোধ জানিয়েছেন। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা হিসাবে, আমিও সেই অনুরোধের সমর্থনে লিখছি। আমি বিশ্বাস করি, আপনি সম্মত হবেন।"

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত চরমে উঠলে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। যা স্বাগত জানিয়েছে ভারত। কিন্তু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এককদম এগিয়ে আগ বাড়িয়ে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি নিয়ে প্রথমেই পোস্ট করে দেন। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি আরও লিখেছেন, "ভারত ও পাকিস্তানের শক্তিশালী এবং অটল নেতৃত্বের জন্য আমি অত্যন্ত গর্বিত... আমি গর্বিত যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপনাদের এই ঐতিহাসিক এবং বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পেরেছে। যদিও আলোচনা করা হয়নি, আমি এই দুই মহান জাতির সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে চলেছি। তাছাড়া, আমি আপনাদের দু'জনের সঙ্গে কাজ করে দেখব যে, 'হাজার বছর পর' কাশ্মীরের ব্যাপারে কোনও সমাধানে পৌঁছানো যায় কি না।"

ট্রাম্পের আগ বাড়িয়ে এই পদক্ষেপে ভাল চোখে নেননি এদেশের অনেক রাজনীতিক। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তাঁরা এর বিরোধিতা করেছেন।