নয়াদিল্লি: সেনায় নিযুক্তির 'অগ্নিপথ' প্রকল্প (Agnipath Scheme) ঘিরে বিগত চার দিন ধরে আগুন জ্বলেছে দেশে। একটি বা দু'টি নয়, নয় নয় করে বিহারে (Bihar Agnipath Agitation) ৬০টি ট্রেনের একাধিক কামরা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ (Bihar Arson)। কমপক্ষে ট্রেনের ১১টি ইঞ্জিনও জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। সবমিলিয়ে পড়ুয়া এবং চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভে গত চার দিনে শুধুমাত্র রেলেরই ৭০০ কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে বলে এ বার সামনে এল। ট্রেনের কামরা পোড়ানো, স্টেশন চত্বরে ভাঙচুর চালানোই নয় শুধু, বিহারে স্টেশন চত্বরে থাকা দোকানপাটেও দেদার ভাঙচুর চলেছে বলে অভিযোগ (Indian Railways Damages)।


কোটি কোটি টাকার সম্পত্তিহানির অভিযোগ 


গত চার দিনে বিহারের ১৫টি জেলায় দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়েছে। তাতে মূলত রেলকেই নিশানা করা হয়েছে। রেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ট্রেনের একটি সাধারণ কামরা তৈরি করতে ৮০ লক্ষ টাকা খরচ পড়ে। স্লিপার এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরার ক্ষেত্রে খরচের অঙ্ক যথাক্রমে ১.২৫ এবং ৩.৫ কোটি টাকা। ট্রেনের একটি ইঞ্জিন তৈরি করতে খরচ পড়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা। ১২ কামরার একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন কিনতে ৪০ কোটি টাকা খরচ পড়ে। ২৪ কামরার ট্রেন হলে খরচ পড়ে ৭০ কোটি টাকা। 


ইস্টার্ন-সেন্ট্রাল রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বীরেন্দ্র কুমার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখনও ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক চূড়ান্ত হয়নি। তবে এখনও পর্যন্ত যা হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তাতে ৭০০ কোটির বেশি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা পাঁচটি ট্রেন, ৬০টি কামরা এবং ১১টি ইঞ্জিন জ্বালিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর রেলের তরফে ক্ষয়ক্ষতির বিশদ রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন। 


আরও পড়ুন: Agnipath: ‘অগ্নিপথ’ ইস্যুতে তোলপাড় দেশ, আশঙ্কায় সব রাজ্যকে সতর্কবার্তা কেন্দ্রের


প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হিংসাত্মক আকার ধারণ করায়, গত চার দিনে ৬০ কোটির বেশি যাত্রী টিকিট বাতিল করেছেন বলে জানা গিয়েছে। একাধিক রাজ্যে বাতিল করা হয়েছে বহু ট্রেন। তাতে রেলের আয়েও প্রভাব পড়েছে। শুধুমাত্র বিহারেই রবিবার ৬৭৬টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এ দিন ভোর ৪টে থেকে ট্রেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। রাত ৮টা পর্যন্ত সেখানে চলবে না কোনও ট্রেন। 


রবিবার রাত ৮টা পর্যব্ত ট্রেন বন্ধ বিহারে


হিংসার ঘটনায় শনিবারই বিহারে ২৫টি এফআইআর দায়ের হয়। গ্রেফতার করা হয় ২৫০-এর বেশি বিক্ষোভকারীকে। তিন দিনে ১৩৮টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৭১৮ জন। সিসিটিভই ফুটেজ দেখে আরও লোকজনকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।