প্রসেনজিৎ সাহা, আগরতলা: দেরি করে হলেও বর্ষা পা রেখেছে বাংলায় (Monsoon)। তবে কয়েকদিন ধরে বিরামহীন বৃষ্টি চলছে (Heavy Rainfall) উত্তর পূর্বের একাধিক রাজ্যে। তাতে বিপর্যস্ত ত্রিপুরা (Tripura News),অসম, অরুণাচলপ্রদেশ এবং মেঘালয়ের মতো রাজ্য় (North East Floods)। ত্রিপুরায় গত ৬২ বছরে একদিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে শুক্রবার। শনিবার বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। অসমে প্রবল বৃষ্টিতে ভূমিধসে মৃত্যু হয়েছে দুই শিশু-সহ আরও ৯ জনের। বাংলাদেশে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনই নিস্তার নেই, ২০ জুন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর (Weather Update)।


বৃষ্টিতে ভাসছে বাংলাদেশও


যেদিকে দু’চোখ যায় শুধু জল আর জল। কোথাও বুক-সমান, তো কোথাও আবার কোমর সমান জল। ভাসছে রাস্তা, বাড়ি থেকে জমি, সব কিছু। প্রকৃতির রোষ কেড়ে নিচ্ছে একের পর এক প্রাণ। 


ত্রিপুরা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ৬২ বছরে একদিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে শুক্রবার। একদিনে বৃষ্টির পরিমাণ ১৪৫ মিলিমিটার।  টানা বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে একাধিক এলাকা। জলের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ত্রিপুরার চন্দ্রপুর, প্রতাপগড়, বলদাখাল, বিটারবন-সহ বহু এলাকা। 


এমন পরিস্থিতিতে ত্রিপুরায় উদ্ধার কাজে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সূত্রের খবর, চন্দ্রপুর থেকে উদ্ধার হয়েছে এক মহিলার মৃতদেহ। অন্যদিকে বিটারবন এলাকায় খোঁজ মিলছে না এক ব্যক্তির। 


আরও পড়ুন: Agnipath: ‘অগ্নিপথ’ ইস্যুতে তোলপাড় দেশ, আশঙ্কায় সব রাজ্যকে সতর্কবার্তা কেন্দ্রের


শনিবার  বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। ত্রিপুরা সদরের এসডিএম অসীম সাহা যদিও বলেন, "জলমগ্ন বহু জায়গা। তবে এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।" এ দিকে, টানা চারদিনের প্রবল বৃষ্টিতে ক্রমশ অবনতি হচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বন্যা পরিস্থিতির। 


সূত্রের খবর, অসমে প্রবল বৃষ্টিতে ভূমিধসে মৃত্যু হয়েছে দুই শিশু-সহ আরও ন'জনের। এই নিয়ে চলতি মরশুমে বন্যা এবং ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৫। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফোন করেছিলেন, অসমের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রের তরফে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস মিলেছে।


অসমের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ  ASDMA-সূত্রে খবর, ২৮ জেলায় ১৮ লক্ষ ৯৪ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। হোজাইয়ের রেললাইনের নীচ দিয়ে বইছে জল। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক মেঘালয় এবং অরুণাচল প্রদেশেরও। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র, কোপিলি-সহ বহু নদী। গুয়াহাটির বহু এলাকার রাস্তা জলের তলায়। 


কয়েক লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত


এ দিকে, বাংলাদেশে প্রবল বৃষ্টিতে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪০ লক্ষের বেশি মানুষ। সে দেশের পরিস্থিতির ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী জয়া এহসান। বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। কয়েক জায়গায় ধস নেমে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।