শ্রীনগর: গুলি লাগার পরও জঙ্গিদের কামড়ে ধরে রেখেছিল সে। সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার আগেও বীর সৈনিকের মতোই লড়াই। কিন্তু জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে পারল না ভারতীয় সেনার সারমেয়  ‘জুম’ (Army Dog Zoom)। টানা তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর বৃহস্পতিবার মারা গেল সে। সেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে তার। 


হাসপাতালে মৃত্যু হল সেনা সারমেয় ‘জুম’-এর


গুলি লাগার পর সেনার পশু হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় ‘জুম’-এর। তার পর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিল সে।  সেখানেই বৃহস্পতিবার দুপুরে মৃত্যু হয় তার। সেনার তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ‘অ্যাডভান্স ফিল্ড পশু হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল সেনা সারমেয় জুমের। সেখানেই আজ দুপুর ১২টায় মৃত্যু হয়েছে তার। অথচ পৌনে ১২টা নাগাদও ভালই সাড়া দিচ্ছিল সে। আচমকা শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং পড়ে যায়’।


জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu And Kashmir) অনন্তনাগে সোমবার ভোরে সেনার সঙ্গে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে যায় ‘জুম’। সেখানেই জঙ্গিদের ছোড়া দু'টি গুলি এসে লাগে তার গায়ে। তার পরেও জঙ্গিদের কামড়ে ধরে লড়াই চালিয়ে যায় সে। এর পর পশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। হাসপাতালেই মৃত্য়ু হল ‘জুম’-এর। 


আরও পড়ুন: Jagdeep Dhankar : 'আইনের শাসন নয়, শাসকের আইন চলে’, উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার পরেও ধনকড়ের মুখে বাংলার আইনশৃঙ্খলা


সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় জঙ্গিরা আশ্রয় নিয়ে রয়েছে বলে গোপন সূত্রে খবর এসে পৌঁছয়। সেই মতো রবিবার গভীর রাতেই তল্লাশি অভিযা শুরু হয়। তাতে সেনার সঙ্গী হয় ‘জুম’। দক্ষিণ কাশ্মীরে সেনার জঙ্গি বিরোধী অভিযানে দীর্ঘদিন ধরেই শামিল সে। সোমবার ভোরের দিকে অনন্তনাগের একটি বাড়ি ঘিরে ফেলা হয়। ওই বাড়িতেই জঙ্গিরা লুকিয়ে রয়েছে বলে খবর ছিল। তাই বাড়ির ভিতর প্রথমে পাঠানো হয় ‘জুম’কে, যাতে বাড়িটি খালি করা যায়। সেই সময়ই সারমেয়টির শরীরে দু’টি গুলি লাগে।


দীর্ঘ দিন ধরে ভারতীয় সেনার অংশ ছিল ‘জুম’ 


কিন্তু গুলিবিদ্ধ হয়েও ‘জুম’ লড়াই চালিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। সেনা সূত্রে বলা হয়েছে, গুলি লাগার পরও জঙ্গিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ‘জুম’। জঙ্গিদের সঙ্গে চলে টানাহ্যাঁচড়া। তাতে সুবিধাই হয় সেনার। গুলি ছুড়ে দুই জঙ্গিকে ধরাশায়ী করে সেনা। ওই দুই জঙ্গিরই মৃত্যু হয়েছে। সেনার এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘জুম উচ্চ পর্যায়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, হিংস্র এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সারমেয়। জঙ্গিদের আশ্রয়স্থল চিহ্নিত করে, তাদের কুপোকাত করার প্রশিক্ষণ রয়েছে তার। সোমবারও দুই জঙ্গিকে শনাক্ত করে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। সেই সময় দু’টি গুলি লাগে তার শরীরে। সেই ক্ষত নিয়েও সাহসী সৈনিকের মতোই লড়াই চালিয়ে যায়। তার জন্যই দুই জঙ্গিকে নিকেশ করা সম্ভব হয়।’’