আমদাবাদ: বয়স মাত্র ২৩ বছর। অথচ মর্মান্তিক পরিণতির রাস্তায় হেঁটেছেন। দেশজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে আয়েশা আরিফ খানের আত্মহত্যার ঘটনায়।


নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন গুজরাতের আমদাবাদের বধূ। এবং তার আগে ভিডিও রেকর্ডিং করে নিজের শেষ বার্তা দিয়েছেন। সবরমতী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি। নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার আগে একটি ভিডিও করেন আয়েশা। সেখানে তিনি বলেন, কারও চাপে বা প্ররোচনায় নয়, নিজের ইচ্ছেতেই তিনি নিজেকে শেষ করার পথ বেছে নিয়েছেন। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়। মোবাইলে রেকর্ড করা ভিডিওতে আয়েশা তাঁর বাবার উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন। আয়েশা বলেছিলেন, ‘আমি খুব খুশি আর শান্তিতে মরতে চাই। আমি লড়াই করতে চাই না। আমি আরিফকে ভালবাসি।’


আত্মহত্যার আগে স্বামী আরিফকে ওই তরুণী ফোন করেছিলেন। ফোন করেছিলেন বাবা-মাকেও। বাবা-মায়ের সঙ্গে আয়েশার শেষ ফোনকলের রেকর্ড পুলিশের হাতে এসেছে। কী রয়েছে সেই কথোপকথনে?


মা-বাবা: কোথায় তুই?


আয়েশা: নদীর কাছে। আসছি।


মা-বাবা: মোটুকে পাঠাচ্ছি। হ্যালো, আমাদের কথা শোন।


আয়েশা: আমার আর কিছু শোনার নেই বাবা।


মা-বাবা: বাজে কথা বলিস না, নে তোর মায়ের সঙ্গে কথা বল।


আয়েশা: আমার আর কিছু শোনার নেই, জলে ঝাঁপ দেব শুধু। আমি আর বাঁচতে চাই না, হাঁফিয়ে উঠেছি।


মা-বাবা: এরকম কিছু করিস না।


আয়েশা: ভিডিও পাঠিয়ে দিয়েছি, এবার আমি মরতে চাই।


মা-বাবা: আমাদের কথা শোন মা...


আয়েশা: অনেক হয়েছে। এই জীবনে আমি ক্লান্ত। আর কত সহ্য করব।


মা-বাবা: মায়ের দিব্যি তুই বাড়ি ফিরে আয়।


আয়েশা: বেঁচে গেলে নিয়ে যেও। তা নাহলে কবর দিয়ে দিও।


মা-বাবা: আমি কাল যাচ্ছি, সব কিছু ঠিক করে দেব।


আয়েশা: আরিফের সঙ্গে যা কথা বলার বলে নাও।


মা-বাবা: আমাদের কথা শুনবি না?


আয়েশা: মৃত্যু দরজায় কড়া নাড়ছে। আর বাঁচতে চাই না।


মা-বাবা: রাস্তা আছে, সমাধানের রাস্তা আছে।


আয়েশা: ও বলছে মামলা না করলে ভেবে দেখতাম।


মা-বাবা: কাল গিয়ে কথা বলব, মামলা তুলে নেব।


আয়েশা: তাও ও আমার জীবনে আর ফিরবে না।


মা-বাবা: ওর বাবাও আসবে আমাদের কথায় বিশ্বাস রাখ।


আয়েশা: অনেক শুনেছি।


মা-বাবা: পবিত্র কোরানের দিব্যি, বাড়ি আয়।


আয়েশা: আমি আর যাব না।


https://bengali.abplive.com/news/india/ahmedabad-news-woman-ayesha-khan-releases-suicide-video-before-jumping-into-sabarmati-river-803827/amp


আরিফের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। দমকলের উদ্ধারকর্মীরা ওই মহিলার দেহ উদ্ধার করে তা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। গোটা ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ, তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, রাজস্থানের বাসিন্দা আরিফ খানের সঙ্গে ২০১৮ সালে বিয়ে হয়েছিল আয়েশার। বিয়ের পর থেকেই আরিফ এবং তার বাড়ির লোকেরা পণের জন্য আয়েশার ওপর অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। ভাতভা থানায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন আয়েশা। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলেছে।