মুজফফরপুর: শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এখন ভূরিভূরি অভিযোগ। বিশেষ করে এই করোনা পর্বে দীর্ঘদিন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় (University) বন্ধ থাকার দরুণ অনেকদিন ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে পারেননি তাঁরা। অথচ পুরো বেতন পেয়েছেন। আর তার জেরেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর অনেকেরই রাগ জমেছে। তবে এবার এমন এক শিক্ষকের (Univer sity Professor) কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল (Viral) হয়েছে, যাঁর প্রসঙ্গে সুখ্যাতি করতে গিয়ে ক্লান্ত হচ্ছেন না নেটিজেনরা। সকলেই বিহারের ওই শিক্ষকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কারণ নিজের ২ বছর ৯ মাসের বেতন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। ওই শিক্ষক জানিয়েছেন, ২ বছর ৯ মাস ধরে পড়ুয়াদের ক্লাস করাননি তিনি। আর তাই বেতন নিতে পারবেন না। সেইজন্য ফিরিয়ে দিয়েছেন ২৩ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা।


জানা গিয়েছে, এই অধ্যাপকের নাম ডক্টর লালন কুমার। তিনি মুজফফরপুরের নীতিশ্বর কলেজের অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর। ওই কলেজেরই রেজিস্টারের হাতে নিজের ২ বছরের বেশি সময়ের বেতন তুলে দিয়েছেন তিনি। কলেজের রেজিস্টারের হাতে অধ্যাপকের বিপুল অঙ্কের চেক তুলে দেওয়ার ঘটনা জানাজানি হতেই কার্যত আকাশ থেকে পড়েছেন সকলে। একুশ শতকেও এমন সৎ মাস্টারমশাইয়ের নজিরবিহীন কীর্তি শুনে অভিভূত সকলে। নেটিজেনরা বলছেন, বর্তমান সমাজে এমন ঘটনা সত্যিই শোনা যায় না। অনেকে জানিয়েছেন একদম চমকে গিয়েছেন তাঁরা।


প্রথমে অবশ্য কলেজের রেজিস্টার এই চেক নিতে নারাজ ছিলেন। কিছুতেই এভাবে অধ্যাপকের বেতন ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সায় দেননি তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত অধ্যাপকের দাবি মেনে নিয়ে চেক নিয়ে নেন তিনি। ডক্টর লালন কুমার জানিয়েছেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তিনি এও জানিয়েছেন যে কলেজে নিয়োগের পর থেকে তিনি এখানে পড়াশোনার পরিবেশ দেখেননি। ১১০০ ছাত্র হিন্দি বিভাগে ভর্তি হয়েছে অথচ তাদের উপস্থিতি শূন্য। তাই তিনি নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেননি। করোনাকালে অনলাইন ক্লাস চালু হলেও পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করেনি। এই বিষয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কলেজ প্রশাসনকেও জানিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে তাঁকে এই কলেজে নিযুক্ত করা হয়েছিল। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন অ্যাকাডেমিক কাজ করার সুযোগ পাবেন এমন কলেজে যেন তাঁকে স্থানান্তর করা হয়।


আরও পড়ুন- মোমের মূর্তিতে 'ফিরলেন' বাবা, বাঁধভাঙা আবেগ কনের