নয়াদিল্লি: দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত (Justice Uday Umesh Lalit)। সুপারিশ জমা পড়েছিল আগেই। এ বার তাতে সিলমোহর পড়ল তাতে। বুধবার তাঁর নিযুক্তির নোটিস জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আগামী ২৬ অগাস্ট মেয়াদ শেষ হচ্ছে দেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতি এনভি রমনার (Chief Justice of India)। তার পর ২৭ অগাস্ট দেশের ৪৯তম বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করবেন বিচারপতি ললিত।
দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত
আইন মন্ত্রকের কাছ থেকে সুপারিশ চাওয়া হলে, সম্প্রতি বিচারপতি ললিতের নাম সুপারিশ করেন প্রধান বিচারপতি রমনা (CJI NV Ramana)। তবে দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি ললিতের কার্যকাল ৭৪ দিনেই শেষ হবে। আগামী ৮ নভেম্বর তিনি অবসর গ্রহণ করছেন।
এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় সবচেয়ে অভিজ্ঞ হিসেবে পরিচিত বিচারপতি ললিত। ১৯৮৩ সালের জুন মাসে আইনজীবী হিসেবে কেরিয়ার শুরু। বম্বে হাইকোর্টে ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্র্যাকটিস করেছেন।পরে দিল্লিতে চলে আসেন। ২০১৪-র ১৩ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন তিনি। তাঁর বাবা বিচারপতি ইউআর ললিত অভিজ্ঞ আইনজীবী ছিলেন। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হলে, এই বার থেকে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে পৌঁছনো দ্বিতীয় প্রধান বিচারপতি হবেন তিনি। তাঁর আগে, বিচারপতি এসএম সিকরি, দেশের ত্রয়োদশ বিচারপতির ক্ষেত্রে এমনটা ঘটেছিল।
আইনজীবী হিসেবে একাধিক হাই প্রোফাইল মামলায় যুক্ত ছিলেন বিচারপতি ললিত। দেশের প্রাক্তন সেনা প্রধান ভিকে সিংহ, পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ, সলমন খানের হয়ে মামলা লড়েছেন তিনি। দেশের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হয়েও সোহরাবউদ্দিন শেখ এবং তুলসিরাম প্রজাপতি হত্যা মামলায় সওয়াল করেন।
একাধিক হাইপ্রোফাইল মামলার অংশ থেকেছেন বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত
সুপ্রিম কোর্টে একাধিক ঐতিহাসিক রায়ের অংশ থেকেছেন বিচারপতি ললিত, যার মধ্যে অন্যতম ছিল তিন তালাক মামলার রায়। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ৩-২ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের নিরিখে মামলার রায় শোনায়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জেএস খেরার, বিচারপতি এস আবদুল নাজির, বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ, বিচারপতি আরএফ নারিমানের সঙ্গে ওই বেঞ্চে শামিল ছিলেন বিচারপতি ললিত। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খেরার এবং বিচারপতি নাজির ছ’ মাসের জন্য রায়দান স্থগিত রাখতে চেয়েছিলেন। ওই সময়ের মধ্যে সরকারকে উপযুক্ত আইন আনার নির্দেশ দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন তাঁরা। কিন্তু বাকি তিন জন তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেন, তাঁদের মধ্যে বিচারপতি ললিত ছিলেন অন্যতম। এ ছাড়াও পকসো আইনে যৌন অভিপ্রায় নিয়ে শিশুর শরীর স্পর্শ করাকে যৌন নিগ্রহের আওতায় আনার পক্ষে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের যে বেঞ্চ, তার নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।