ভদেরওয়া :  রাহুল গাঁধীকে (Rahul Gandhi) তুলোধনা করে কংগ্রেস ছেড়েছেন সম্প্রতি। পাঁচ দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করার সময়ও যে সুর শোনা গিয়েছিল, সেই একই মেজাজে পুরনো দলকে আক্রমণ করলেন গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad)। কংগ্রেস নেতারা যখন তাঁকে লক্ষ্য করে 'ক্ষেপণাস্ত্র' নিক্ষেপ করছিলেন, জবাবে তিনি 'রাইফেল' ব্যবহার করেছেন শুধু বলে মন্তব্য করেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক।


বৃহস্পততিবার জম্মু ও কাশ্মীরের ভদেরওয়ায় একটি জনসভা করেন গুলাম নবি আজাদ । সেখানে তিনি বলেন, "ওরা (কংগ্রেস) আমার বিরুদ্ধে মিজাইল নিক্ষেপ করেছিল, তার পরিবর্তে আমি শুধু ৩০৩ রাইফেল দিয়ে জবাব দিয়েছি। তাতেই ওরা শেষ। আমি যদি ব্যালেস্টিক মিজাইল নিক্ষেপ করতাম তাহলে কী হত ?"


যদিও তিনি প্রয়াত রাজীব ও ইন্ধিরা গাঁধী নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, "৫২ বছর ধরে ওই দলের সদস্য ছিলাম। রাজীব গাঁধীকে আমার ভাই মনে করি এবং ইন্ধিরা গাঁধী আমার মা। ওঁদের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলার আকাঙ্খা আমার নেই।"


আরও পড়ুন ; চিঠিতে নিশানা রাহুল গাঁধীকে, সঙ্গে একরাশ অভিযোগ গুলামের


কংগ্রেস ছাড়ার পর জম্মুতে নিজের প্রথম সভায় আজাদ নিজের রাজনৈতিক দল শুরু করার ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, "আমার দলের কোনও নাম এখনও ঠিক করিনি। জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ সেই নাম ও পতাকা ঠিক করবেন। আমার দলের হিন্দুস্তানি নাম থাকবে যাতে প্রত্যেকেই তা বোঝে।"


দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করে কংগ্রেসের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে সম্প্রতি চিঠি পাঠান আজাদ। সেখানে প্রতি ছত্রে একাধিক সমালোচনা করেন তিনি। বর্ষীয়ান এই নেতার নিশানায় ছিলেন মূলত রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi)।


গুলামের নিশানায় রাহুল:
সনিয়া গাঁধীকে (Sonia Gandhi) তিনি যে চিঠি দিয়েছেন, তাতে তিনি অভিযোগ করেছেন, 'রাহুল গাঁধী রাজনীতিতে আসার পর থেকে, বিশেষ করে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসের পরে আপনি যখন রাহুলকে কংগ্রেসের সহা সভাপতির পদে বসিয়েছেন তার পর থেকেই কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন উনি। সব বরিষ্ঠ ও অভিজ্ঞ নেতাদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।' ইস্তফাপত্রে গুলাম নবি আজাদ অভিযোগ করেন, দলে প্রবীণদের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছিল না। নবীনদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছিল। রাহুল গান্দীর নেতৃত্ব যে তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না, তা চিঠিতে স্পষ্ট করে দেন গুলাম নবি আজাদ।


তাঁর অভিযোগ ছিল, রাহুল প্রবীণ নেতাদের অসম্মান করতেন। কংগ্রসের জি ২৩ গোষ্ঠীর নেতারা দলে সংস্কার চেয়ে চিঠি দেওয়ার পর কপিল সিব্বলের বাড়িতে হামলা হয়েছিল, তাঁকেও অসম্মান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা। সেইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, এখন রাহুলের নিরাপত্তারক্ষীরা দল চালান। ইউপিএ আমলের মতো রিমোট কন্ট্রোলে কংগ্রেস চালানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।