ঝিলম করঞ্জাই,কলকাতা: করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে বিশ্বজুড়ে! নতুন ভাইরাস আগের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক, উদ্বেগ প্রকাশ করে জানাল হু। প্রচলিত RT-PCR পদ্ধতিতে নতুন ভাইরাস ধরা না পড়ার সম্ভাবনা প্রবল, আশঙ্কায় চিকিত্সকরা। রাজ্যগুলিকে সতর্ক থাকার পরামর্শ কেন্দ্রের।
এক করোনায় রক্ষে নেই, তার ওপর বার বার চরিত্র বদলাচ্ছে প্রজাতি। আতঙ্কের নাম ‘ওমিক্রন’। ভাইরোলজির পরিভাষায় B.1.1.529। করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিশ্বজুড়ে সতর্কতা। দক্ষিণ আফ্রিকা, বৎসোয়ানা, হংকং, ইজরায়েল, ব্রিটেনে মিলেছে এই ভাইরাসের নতুন প্রজাতির হদিশ।
যাকে ‘ওমিক্রন’ নামে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। উদ্বেগ প্রকাশ করে WHO-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অধিকর্তা পুনম ক্ষেত্রপাল সিংহ জানিয়েছেন, নতুন ভাইরাস আগের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক। সংক্রমণ রুখতে সতর্ক থাকতে হবে সব দেশকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রায় ৫০ বার জিনের বিন্যাস বদলে তৈরি হয়েছে এই ভাইরাস। যার মধ্যে ৩২ বার বদলেছে স্পাইক প্রোটিনের চরিত্র।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ভাস্কর নারায়ণ চৌধুরী বলেন, একাধিক মিউটেশন হয়েছে। স্পাইক প্রোটিনেও অনেকবার বদল এসেছে। আরটি-পিসিআর-এ ধরা না পড়ার সম্ভাবনা ..... ভ্যাকসিন নিতেই হবে।" প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত যে তথ্য এসেছে তা বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে এর বদল হয়েছে মূলত স্পাইক প্রোটিনে। ৩২ বার স্পাইক প্রোটিনের জিনগত কাঠামোতে বদল হয়েছে। জিনের প্রোটিন মধ্যস্থ অ্যামাইনো অ্যাসিডের স্থান বদল হয়েছে ৩২ বার।
আরও পড়ুন, গ্রামীণ বাংলায় পুত্রসন্তানের তুলনায় কন্যাসন্তান প্রতি হাজারে ৯৯৩
বিশেষজ্ঞরা ভ্যাকসিনের ওপর জোর দিলেও উদ্বেগ বাড়িয়ে Pfizer-BioNTech জানিয়েছে, তারা নিশ্চিত নয়, তাদের ভ্যাকসিন ‘ওমিক্রন’ মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারবে কি না। ইতিমধ্যেই সংক্রমিত দেশের সঙ্গে উড়ান যোগাযোগ ছিন্ন করেছে বিভিন্ন দেশ। সেই পথে হাঁটার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছে দিল্লি সরকার। এই পরিস্থিতিতে শনিবার জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, রাজ্যগুলিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সংক্রমিত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের RT-PCR টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। রিপোর্ট পজিটিভ হলে নমুনা জেনোমিক সিকোয়েন্সিং-এ পাঠাতে হবে।
এদিকে, শনিবার এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিক এবং বিভিন্ন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা। পরিকাঠামো তৈরি রাখা হচ্ছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৯ কোটির বেশি মানুষকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৬ কোটির বেশি মানুষ। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন প্রায় ৩ কোটি মানুষ। সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারেননি এমন সংখ্যা ১৯ লক্ষের বেশি।
এবিষয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, অনেক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান, পরিযায়ী শ্রমিক প্রথম ডোজ নিয়ে অন্য রাজ্যে চলে গেছেন। কিছু মানুষ মাঝে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় পরে ভ্যাকসিন পাবেন। যাঁদের বকেয়া আছে তাঁদের দ্রুত ভ্যাকসিন দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।