চৌসা: গঙ্গার জলে ভেসে বেড়াচ্ছে পচা-গলা মৃতদেহ। জলে থেকে কার্যত ফুলে উঠেছে সেগুলি। শিউরে ওঠার মতোই পরিস্থিতি। ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের বক্সারের গঙ্গার তীরে। সোমবার সকালে ঘটনাটি স্থানীয়দের চোখে পড়তে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয়দের আশঙ্কা, প্রত্যেকটি মৃতদেহই করোনা আক্রান্তদের। যেগুলি না পুড়িয়ে গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিহার-উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে অবস্থিত চৌসা জেলা। সেখানকার গঙ্গাতেই এই ভয়াবহ দৃশ্য। এ প্রসঙ্গে চৌসার জেলা আধিকারিক অশোক কুমার জানিয়েছেন, 'প্রায় ৪০-৪৫টি দেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে মহাদেব ঘাটে।' তিনি আরও বলেন, 'ইচ্ছাকৃতভাবেই লাশগুলি নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলেই অনুমান। সব মিলিয়ে লাশের সংখ্যাটা প্রায় ১০০টির কাছে হতে পারে'।
স্থানীয় প্রশাসনের অনুমান, এই দেহগুলি উত্তরপ্রদেশ থেকেই ফেলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মহাদেব ঘাটে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে সৎকারের কাজও শুরু হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।
কোথা থেকে এল এত মৃতদেহ? প্রশাসনের কাছেও নেই কোনও স্পষ্ট উত্তর। বক্সার এসডিও কেকে উপাধ্যায় বলেন, 'প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রত্যেকটি দেহই ৫-৬ দিনের পুরনো। দেহগুলি একদম পচে গিয়েছে। কোথা থেকে দেহগুলো এল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।'
চৌসার মহাদেব ঘাটের এক ডোমের স্ত্রী অঞ্জরিয়া দেবীর অভিযোগ, রোজই করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ নিয়ে তাঁদের পরিবাররা আসছেন, এবং সেগুলির সৎকার না করেই নদীর জলে ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন। প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ১০টি করে দেহ ফেলে দিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। অঞ্জরিয়া দেবীর কথায়, 'সৎকারের সামর্থ নেই, তাই অর্থাভাবেই এই কাজ করছেন পরিবারের লোকজন।'
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশেরে হামিরপুর জেলাতেও একই ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। সেখান থেকে প্রায় ডজনখানেক মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে গত রবিবার। চলছে পরবর্তী তদন্ত। কোথা থেকে দেহগুলি এল তা নিয়েও স্পষ্ট উত্তর নেই যোগীর সরকারের কাছে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ। মহামারি কবলিত দেশে অব্যাহত মৃত্যুমিছিল। সৎকারের খরচ জোগাতে না পেরে শয়ে শয়ে লাশ নদীর জলে ভাসিয়ে দেওয়ার ছবিটাও কার্যত আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।