নয়াদিল্লি: প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ (Indian Ministry of Defence)। সেই সেনা সর্বাধিনায়ক (Chief of Defence Staff/CDS) পদের নিয়োগের জন্য নয়া নির্দেশিকা প্রকাশ করল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, পদে আসীন অথবা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল, এয়ার মার্শাল অথবা ভাইস অ্যাডমিরাল, যাঁদের বয়স ৬২ পেরোয়নি, তাঁরাই সেনা সর্বাধিনায়ক পদের জন্য আবেদন জানাতে পারেন। সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌসেনা, তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় সাধনেই সেনা সর্বাধিনায়ক পদটির উৎপত্তি। নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, ওই পদে আবেদনের পথ আরও প্রশস্ত হল। একই সঙ্গে সরকারেরও সুবিধা হল, বেশই সংখ্যক আবেদনের মধ্যে থেকে যোগ্যতমকে বেছে নেওয়ার (Indian Armed Forces)।

  


সেনা সর্বাধিনায়ক নিয়োগের বিধিনিয়মে রদবদল


সেনা সর্বাধিনায়ক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও একটি বদল ঘটানো হয়েছে, যা হল, অবসরপ্রাপ্ত সেনা প্রধানরাও আবেদন জানাতে পারবেন এখন থেকে। তবে অনূর্ধ্ব ৬২-র মাপকাঠি বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্র। গত বছর ৮ ডিসেম্বর হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়ত। মৃত্যু হয় তাঁর স্ত্রীরও। সেই থেকে ওই পদটি খালি পড়ে ছিল। সম্প্রতি সেই শূন্যস্থান পূরণে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। তার আগে নয়া নির্দেশিকা জারি করা হল। 


সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌসেনা আইনের আওতায় সোমবার একটি পৃথক নির্দেশিকা জারি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তাতেই কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল, এয়ার মার্শআল এবং ভাইস অ্যাডমিরালদের সেনা সর্বাধিনায়ক পদে নিয়োগের রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। ১৯৫০ সালের বায়ুসেনা আইনের উল্লেখ করে ওই নির্দেশিকায় বলা হয়, 'জনস্বার্থে প্রয়োজন বোধ করলে কর্মরত অথবা অবসরপ্রাপ্ত, নিযোগকালে ৬২ বছরের গণ্ডি না পেরনো এয়ার মার্শাল বা এয়ার চিফ মার্শালকে সেনা সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার।' শুধু তাই নয়, প্রয়োজন বুঝলে সেনা সর্বাধিনায়কের চাকরির মেয়াদ ৬৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানোও হতে পারে বলে জানায় কেন্দ্র। একই ভাবে ১৯৫০ সালের সেনা আইন এবং ১৯৫৭ সালের নৌসেনা আইনেও একই রকম বিবৃতি জারি করা হয়। 


আরও পড়ুন: LPG Subsidy Rule Change: রান্নার গ্যাসের ভর্তুকির নিয়মে বদল, আপনি কতটা ভর্তুকি পাবেন জানেন ?


সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌসেনা প্রধানদের মেয়াদ সাধারণত তিন বছর অথবা ৬২ বছর বয়সের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সেনাপ্রধানের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরই সেনা সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন বিপিন রাওয়ত। সেই নিরিখে তিন বাহিনীর প্রধানদের থেকে বয়সে বড় ছিলেন তিনি এবং বাকিদের থেকে পদের গুরুত্বও বেশি ছিল তাঁর। 


তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়কারী সেনা সর্বাধিনায়ক


প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ সেনা বিষয়ক বিভাগের দায়িত্বে থাকেন সেনা সর্বাধিনায়ক। দেশের তিন সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করেন তিনি। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কোথাও কোনও ফাঁক-ফোকর রয়েছে কিনা, তা দেখার দায়িত্বও তাঁদের। আবার  সামরিক বাহিনী থেকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র উপদেষ্টা হিসেবেও বিবেচিত হন তিনি। তিন বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে মদভেদ দেখা দিলে, সেই অদৃশ্য় দেওয়াল ভআঙার দায়িত্বও তাঁর। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের পর থেকেই সেনা সর্বাধিনায়ক পদটি তৈরির দাবি উঠতে শুরু করেছিল। ২০২০-র জানুয়ারি মাসে বিপিন রাওয়তই দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন।