নয়াদিল্লি: উৎসবের মরশুমে রাজধানীতে জঙ্গি হানার আশঙ্কা। দিল্লি পুলিশের তরফে শুরু হয়েছে বিশেষ তৎপরতা। এই নিয়ে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দিল্লি পুলিশের কমিশনার রাকেশ আস্থানা।
সূত্রের খবর, সন্দেহভাজন জঙ্গিদের সূত্র সন্ধানে লোকাল সোর্সকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় সাইবার কাফে, রাসায়নিকের দোকান, পার্কিং এরিয়া ছাড়াও যারা পুরনো গাড়ি কেনাবেচা করে, তাদের ওপর কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, পেট্রোল পাম্প অথবা তেলের ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বড়সড় নাশকতার ছক রয়েছে জঙ্গিদের। বিভিন্ন জায়গায় ভাড়াটে ও শ্রমিকদের ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে দিল্লি পুলিশকে।
এখানে মনে করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন, গতমাসের মাঝামাঝি তিন রাজ্য থেকে ৬ জঙ্গিকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। ধৃতদের মধ্যে ২ জন পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল দাবি করেছে, এই জঙ্গিরা অপারেশনের জন্য টার্গেট করেছিল উৎসবের মরশুমকেই।
আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা, সতর্ক রাজ্য প্রশাসন
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের সিপি নীরজ ঠাকুর জানিয়েছেন, ধৃত জঙ্গিদের জেরা করে জানা গেছে, পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা ভারতে ফেরে।
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল সূত্রে দাবি, জেরার মুখে পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নেওয়া জঙ্গি জিশান দাবি করেছে, ভারতের অর্থনীতির মূলে আঘাত হানাই ছিল তাদের অন্যতম পরিকল্পনা।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরা-পর্বে জিশান দাবি করেছে, কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভারতে ‘ইকোনমিক টেররিজম’ বা ‘অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদে’র নীল-নকশা তৈরি করেছিল আইএসআই।
পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থার মাস্টার প্ল্যান ছিল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বা গুলি চালিয়ে অনেক প্রাণহানি ঘটানো না গেলে, ভারতীয় অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে হবে।
দিল্লি পুলিশ সূত্রের দাবি, জিশান জেরায় জানিয়েছে, কল-কারখানা থেকে শুরু করে গুদাম, বড় বড় শোরুম, দোকান জ্বালিয়ে দিয়ে ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষতি করার কৌশল তৈরি করেছিল পাকিস্তানি জঙ্গি নেতারা।
শুধু তাই নয়, আরও বড় আঘাত করতে দেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি ভারতীয় রেল-কেও টার্গেট করেছিল জঙ্গিরা। দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর, এই প্রসঙ্গে রোমহর্ষক দাবি করেছে জিশান। তার দাবি, ভারতীয় রেলের মাধ্যমে সুতি-বস্ত্রের ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকে নজর ছিল সন্ত্রাসবাদীদের।
জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে জিশানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সুযোগ পেলে কাপড় বোঝাই ট্রেনের বগি বিস্ফোরণে উড়িয়ে দাও। যাতে ব্যাপক আকারে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
পুজোর মরশুম চলছে। পুজো মানেই মানুষের ভিড়। আর নাশকতার জন্য জঙ্গিরা এরকম সুযোগই খোঁজে। সেকথা ভেবেই অ্যালার্ট নিরাপত্তা এজেন্সিগুলো। সব মিলিয়ে বাঙালির প্রাণের উৎসবের মুখেই উদ্বেগ।