নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন (Presidentical Election 2022) যত এগিয়ে আসছে, বিরোধী শিবিরে অস্বস্তি ততই স্পষ্ট হচ্ছে। সর্বসম্মতিতে যশবন্ত সিনহাকে মনোনীত করলেও, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ মনোনীত জনজাতি নেত্রী দ্রৌপদী মুর্মু (Draupadi Murmu) না পসন্দ, প্রকাশ্যে কেউই এমন বলার সাহস করছেন না। সেই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের (Congress) অস্বস্তি বাড়ালেন দলেরই নেতা অজয় কুমার (Ajoy Kumar)। দ্রৌপদীকে জনজাতি মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরা উচিত নয় বলে মন্তব্য করলেন তিনি।
দ্রৌপদীকে নিয়ে নেতার মন্তব্যে অস্বস্তি কংগ্রেসে
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শাসক না বিরোধী, কাদের প্রার্থী এগিয়ে, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছেই। সেই পরিস্থিতিতেই সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর মুখোমুখি হয়ে মতামত জানান ঝাড়খণ্ড প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অজয় কুমার। গত কয়েক বছরে দেশে তফসিলি জাতি-উপজাতি মানুষের অবস্থার অবনতি হয়েছে বই উন্নতি হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, "দ্রৌপদী মুর্মু বলে নয়, যশবন্ত সিন্হাও প্রার্থী হিসেবে যথেষ্ট উপয়ুক্ত। দ্রৌপদীও ঠিকঠাক মানুষ। কিন্তু অসৎ ভাবনার প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে ওঁকে। ওঁকে কখনওই জনজাতি মানুষের প্রতিনিধি বা প্রতীক হিসেবে ধরা উচিত নয়। রামনাথ কোবিন্দ রাষ্ট্রপতি থাকাকালীনই হাথরস ধর্ষণ ঘটে। উনি কোনও মন্তব্য করেছিলেন কি? তফসিলি মানুষজন চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।"
আরও পড়ুন: Jagdeep Dhankhar: রাজ্যকে তীব্র আক্রমণ ধনকড়ের, 'রাজভবন তামাশার জায়গা হয়ে উঠেছে,' পাল্টা পার্থ-বিমান
নির্বাচনে জয়যুক্ত হলে, দেশের প্রথম জনজাতি রাষ্ট্রপতি হবেন দ্রৌপদী। দেশের দ্বিতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতির তকমাও জুড়বে নামের পাশে। ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই হয়েছেন তিনি। ২০১৫ থেকে ২০২১ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। ওড়িশার জনজাতি গ্রাম ময়ূরভঞ্জের বাসিন্দা তিনি। চরম অভাবের মধ্যেই পড়াশোনা তাঁর। কিন্তু তাঁর জনজাতি পরিচয়কে সামেন রেখে বিজেপি নিজেদের রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরণ করতে চাইছে বলে অভিযোগও উঠছে। নাম ঘোষণা হওয়ার পর যে ভাবে মন্দিরে ঝাঁট দিতে ছুটে যান দ্রৌপদী, তাঁর সেই আচরণ জনজাতি সম্প্রদায় নয়, হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির পরিচায়ক বলেও দাবি করেন সমালোচকরা।
অজয়ের গলাতেও সেই সুর ধরা পড়েছে। তাঁর বক্তব্য, "এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ভারত দেশের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই। সমমনস্ক সব দলের বিরোধী প্রার্থীকেই ভোট দেওয়া উচিত। ভুয়ো প্রতীক বানিয়ে মানুষকে ভুল বোঝানোর কাজই করে আসছে মোদি সরকার। " তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি-র জাতীয় মুখপাত্র শেহজাদ পুণাওয়ালা। কংগ্রেস নেতা দ্রৌপদীকে অপমান করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দ্রৌপদীকে অসম্মান করা হয়েছে, দাবি বিজেপি-র
২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিজেপি-র জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যও ছিলেন দ্রৌপদী। ময়ূরভঞ্জে বিজেপি-র জেলা সভাপতিও ছিলেন ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ওড়িশায় বিজেপি-র জনজাতি শাখার প্রধান ছিলেন।