নয়া দিল্লি : কৃষি আইন প্রত্যাহারে বিল আনার সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই অনুমোদন মিলেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার। আগামী ২৯ নভেম্বর শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। অধিবেশনের শুরুতেই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভ শেষ করার জন্য কৃষকদের কাছে আবেদন জানালেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনেই তিন কৃষি আইন প্রত্যাাহারের বিল উপস্থাপনা করা হবে। তাছাড়া তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণার পর আর কৃষকদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার কোনও মানে হয় না। কৃষকদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আপনারা বিক্ষোভ শেষ করে বাড়ি ফিরে যান।"
২০২০-র সেপ্টেম্বরে, কৃষি আইন চালু করার পর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে মোদি সরকার। গত দু’বছর ধরে, দিল্লির সিঙ্ঘু সীমান্তে মোদি সরকারের আনা ৩টি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতেই আন্দোলন চালিয়ে গেছেন কৃষকরা। চলতি বছরের ১৯ নভেম্বর, তিন বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার সকালে আচমকাই জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে, কৃষকদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
এরপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষি আইন প্রত্যাহারে বিল আনার সিদ্ধান্তে অনুমোদনও মেলে। ক্যাবিনেটে সবুজ সঙ্কেত মেলার পর, আগামী সপ্তাহে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই শুরুতেই কৃষি আইন প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরুর সম্ভাবনা। তবে যতক্ষণ না পর্যন্ত আইন প্রত্যাহারের গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়, ততদিন অবধি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। সম্প্রতি সিঙ্ঘুতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার বৈঠক হয়। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০-র সেপ্টেম্বরে বিতর্কিত কৃষি আইন সংসদের উভয় কক্ষে পাস করিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তারপরই রাস্তায় নামেন কৃষকরা। এই ইস্যুতে প্রায় প্রতিদিনই কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শুরু করেন রাহুল গাঁধী। তিনি গত ১৪ জানুয়ারি জানিয়েছিলেন, এই আইন আগামীদিনে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবে কেন্দ্র। ১৯ নভেম্বর ঠিক তাই হল। দেশের অন্যান্য বিরোধী দলও সরব হয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে। হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও দেশের অন্যান্য রাজ্যের কৃষকদের মিছিল এসে হাজির হয় রাজধানীর দরজায়। আগামী বছরের শুরুতেই রয়েছে পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে, বছরের শেষে এসে কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে এই তিনটি আইন প্রত্যাহার করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।