নয়াদিল্লি: বিপুল ছাড়ে রাশিয়ার সঙ্গে তেল কেনার চুক্তি সারা হয়ে গিয়েছে। তার পরেও দেশে ফের শিল্পক্ষেত্রের জন্য ডিজেলের (Diesel Price Hike) ধাম একাধাক্কায় লিটারে ২৫ টাকা বাড়ল।  তবে সাধারণ মানুষ নন, একসঙ্গে বেশি পরিমাণ ডিজেল কেনেন যে সমস্ত গ্রাহক (Bulk Customers), তাঁদের জন্যই আপাতত বাড়ল লিটার প্রতি ডিজেলের দাম (Bulk Fuel Price Hike)।


সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী, রেল সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী, পরিবহণ, তাপবিদ্যুৎ, সিমেন্ট, রাসায়নিক এবং অন্য শিল্প সংস্থার বেশি জ্বালানির প্রয়োজন পড়ে। এ ছাড়াও বিমানবন্দর, শপিং মল এবং অন্য শিল্প ক্ষেত্রেও জ্বালানির চাহিদা তুলনামূলক বেশি। তাই একসঙ্গে বেশি পরিমাণ পেট্রল বা ডিজেল কিনতে হয় তাদের। তাদেরই এ বার লিটারে ২৫ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হবে ডিজেল।


নয়া দাম অনুযায়ী, মুম্বইয়ে এই মুহূর্তে শিল্পক্ষেত্রের জন্য লিটার প্রতি ডিজেলের দাম বেড়ে ১২২ টাকা ৫ পয়সা হয়েছে, অথচ পেট্রল পাম্পে দাম রয়েছে ৯৪ টাকা ১৪ পয়সাতেই। দিল্লিতে শিল্পক্ষেত্রের জন্য লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ১১৫ টাকা হলেও, পেট্রল পাম্পে দাম রয়েছে ৮৬ টাকা ৬৭ পয়সা।


তবে সাধারণ মানুষ, মোটরবাইক, গাড়ি চালাতে পেট্রল পাম্প থেকে ডিজেল কেনেন যাঁরা, তাঁদের জন্য দাম আপাতত বাড়ানো হয়নি বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।


আরও পড়ুন: Singur: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাষিদের ফেরানো জমিতে জলাশয় কেন? অভিযোগ তুলে DYFI এর বাইক মিছিল


দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তার জেরেই এই মূল্যবৃদ্ধি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবও জ্বালানির দামে পড়েছে বলে দাবি উঠছে। কিন্তু অতি সম্প্রতিই রাশিয়ার থেকে মোটা অঙ্কের ছাড়ে ৩০ লক্ষ ব্যারেল তেল কেনার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন। তার পরেও ডিজেলের দাম লিটারে ২৫ টাকা বাড়ানোয় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শিল্প মহলে।


একই সঙ্গে আগামী দিনে জ্বালানি কিনতে গিয়ে মধ্যবিত্তেরও হাত পুড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে গত ৪ মার্চ থেকে জ্বালানির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সেই নিয়ে তেল সংস্থাগুলি কেন্দ্রের দাম চাপ বাড়াচ্ছে। লিটারে অন্তত ১২ থেকে ১৫ টাকা করে দাম বাড়ানোর সুপারিশ ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে।


কারণ এই নিয়ে পঞ্চম মাসে দেশের পেট্রল পাম্পগুলির ব্যবসা লাফিয়ে বেড়েছে। বাস মালিক, শপিং মল মালিকরা সরাসরি তেল সংস্থার সঙ্গে দরাদরিতে যাওয়ার বদলে, পেট্রল পাম্প থেকে তেল কিনছেন বলেই এমন পরিস্থিতি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাতে বেসরকারি খুচরো বিক্রেতরা বিপাকে পড়েছেন। এর ফলে নায়ারা এনার্জি, জিও-বিপি, শেল-এর মতো সংস্থা সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। অন্যথায় ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা। এর আগেও মূল্যবৃদ্ধিতে ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়ার নজির রয়েছে। ২০০৮ সালে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ দেশের ১ হাজার ৪৩২টি পেট্রল পাম্প বন্ধ করে দেয়।