নয়াদিল্লি: গুজরাতের মসনদের লড়াই কবে? সব ঠিক থাকলে আজই তা ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা নাগাদ গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা হবে। গুজরাতের বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ ফুরোচ্ছে আগামী বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি।


কিছুদিন আগেই হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হয়েছিল। গুজরাত বাকি ছিল। পশ্চিমের এই রাজ্যে গত ২৫ বছর ধরে মসনদে রয়েছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। পরে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রিত্বের গদিতে বসেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও গুজরাতের বাসিন্দা। গত বিধানসভা নির্বাচনেও সহজেই জয় পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু এবার কী হবে? সেটাই এখন রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন।|


মোরবি সেতু দুর্ঘটনা:
দোরগোড়ায় গুজরাত বিধানসভা নির্বাচন, তার আগেই বেশ চাপে সেখানকার বিজেপি সরকার। সম্প্রতি মোরবি সেতু দুর্ঘটনায় বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে। এমন ঘটনায় বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে গুজরাতের বিজেপি সরকার। গোটা ঘটনায় কার্যত রাজ্য প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলে নিশানা করেছে কংগ্রেস। একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলেছে হাত শিবির। পাশাপাশি লাগাতার আক্রমণ করছে আপ-ও। যারা বেশ কিছুদিন ধরেই গুজরাতের রাজনৈতিক মানচিত্রে গুরুত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে পাঞ্জাবে জয়ের পরে গুজরাতেও ভাল ফলের জন্য ঝাঁপিয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ।    


দুর্ঘটনায় কাঠগড়ার প্রশাসন:
গুজরাতের মোরবিতে মাচ্ছু নদীর ওপর ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত প্রায় দেড়শো লোকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে শিশুও। তারপর থেকেই উঠতে শুরু করছে নানা প্রশ্ন। কার গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা হয়েছে তা নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে। যে সংস্থাকে সেতু মেরামতের বরাত দেওয়া হয়েছিল তাদের কোনও অভিজ্ঞতাই ছিল না বলে অভিযোগ। সূত্রের দাবি, সেতুটি সংস্কারের পর বিজেপি শাসিত মোরবি পুরসভার তরফে কোনও ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই কেন খুলে দেওয়া হল সেতু? এমনই একাধিক প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। ভোটের জন্য তড়িঘড়ি সেতু খুলে দিয়ে এমন বিপদ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। নরেন্দ্র মোদির গুজরাত সফরের মাঝেই এমন ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে যান মোদিও। তাঁর সফর নিয়েও নানা অভিযোগ ওঠে। কোনও সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে কিনা তা জানতে চাননি বলে অভিযোগ ওঠে।


ভোটের আগে বড় সিদ্ধান্ত:
বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে চলে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিষ্টান, যাঁরা গুজরাতের আনন্দ ও মেহসানায় দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করছেন, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের আওতায় তাঁদের সকলকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র (Indian Citizenship)। ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে এদেশে অন্তত ৫ বছর বসবাসের সময়সীমা এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই সিদ্ধান্ত গুজরাতের মদনদে ফিরতে বিজেপিকে কোনও সাহায্য করে কিনা, তা অবশ্য সময়ই বলবে।


আরও পড়ুন: টিকা দিয়ে রক্ষা করেছেন মোদিজি, তাই বিজেপি-কে বাঁচানো কর্তব্য সকলের, ভোটের প্রচারে বললেন নাড্ডা