Karnataka Hijab News Update:  কর্ণাটকের হিজাব-বিতর্ক মামলায় আপাতত হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করল সুপ্রিম। আবেদনকারীরা কর্ণাটক হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশে স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে শুনানির আর্জি গ্রহণ করল না। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এ ব্যাপারে আগে কর্ণাটক হাইকোর্টের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসুক। এরপর শুনানি করা হবে। আবেদনকারীরা হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী আদেশকে মুসলিম তরুণীদের প্রতি বিভেদমূলক বলে দাবি করেছিলেন।  বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা মহম্মদ আরিফ ছাড়াও কর্ণাটকের মসজিদ, মাদ্রাসার একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। 


শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা উচিত কি অনুচিত? এই প্রশ্নেই উত্তাল কর্ণাটক। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে এই সংক্রান্ত মামলায় বৃহস্পতিবার কর্ণাটক হাইকোর্ট জানায় যে, যতদিন না পর্যন্ত হিজাব বিতর্কের নিষ্পত্তি হচ্ছে, ততদিন অবধি এমন কিছু পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাবেন না, যার সঙ্গে ধর্মীয় সংস্পর্শ আছে, যা উস্কানির কারণ হয়ে উঠতে পারে।  আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি, মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।


কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থি, বিচারপতি কৃষ্ণা দীক্ষিত ও বিচারপতি জে এম খাজি-র বেঞ্চ গতকাল  নির্দেশ দেন, যে কোনও মূল্যে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।


কর্ণাটকে হিজাব বিতর্কের সূত্রপাত গত জানুয়ারি মাসে। উদুপি জেলার সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীদের একাংশ অভিযোগ করেন, হিজাব পরে যাওয়ায়, তাঁদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ক্লাস করতে দেওয়া হচ্ছে না। ধীরে ধীরে এই বিতর্ক ছড়াতে থাকে। গেরুয়া উত্তরীয় পরে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের একাংশকে পথে নামতে দেখা যায়।ভাইরাল হয় এক ছাত্রীকে ঘিরে উন্মত্ত বিক্ষোভ-স্লোগানের ভিডিও। বিভিন্ন জায়গায় কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে অশান্তিও বাধে।


পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, বুধবার কর্ণাটকের ডিপার্টমেন্ট অফ কলেজিয়েট অ্যান্ড টেকনিক্যাল এডুকেশনের পক্ষ থেকে, তাদের আওতায় থাকা, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা করে দেওয়া হয়। গতকাল কর্ণাটকের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে সোমবার থেকে স্কুল খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই।


তবে কর্ণাটকে হিজাব বিতর্কের আঁচ ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি উত্থাপন করে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী ও কংগ্রেস সাংসদ কপিল সিব্বল। তখন প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না, বিচারপতি এ এস বোপান্না ও বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ জানায়,কী হবে, সেটা আগে হাইকোর্টকে ঠিক করতে দিন। এটা নিয়ে তাড়াহুড়ো কেন করব! আগে হাইকোর্টকে মামলা শুনতে দিন।


তবে হিজাব বিতর্কে রাজনৈতিক তরজাও চলছে জোরদার। নারীর পোশাক, নারীর অধিকার নিয়ে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী যে মত প্রকাশ করেছিলেন, তার বিরোধিতায় সরব বিজেপি।সবমিলিয়ে ৫ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আবহেই কর্ণাটকের হিজাব বিতর্ক তোলপাড় ফেলেছে দেশজুড়ে।