নয়াদিল্লি: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে নয়া পালক ভারতের মুকুটে। ব্রিটেনকে ছাপিয়ে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে উঠে এল ভারত (Indian Economy)। ২০২১ সালের শেষ ত্রৈমাসিকের হিসেব অনুযায়ীই, ব্রিটেনকে পিছনে ফেলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে মত অর্থনীতিবিদদের। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের নিরিখেও ব্রিটেনের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ভারত। অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের নিরিখে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (IMF) যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তা থেকেই এই হিসেব মিলেছে (Fifth Largest Economy)।
বিশ্ব তালিকায় ব্রিটেনকে টপকে পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত
করোনা কালে গত দু'বছরে ব্রিটেনের অর্থনীতি একের পর এক বাধার সম্মুখীন হয়েছে। তার উপর রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরেও তৈরি হয়েছে একরকম অনিশ্চয়তা। সেই আবহে ভারতের থেকে তাদের এই পিছিয়ে পড়া ঘোর বিপদের ইঙ্গিত বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। এই মুহূর্তে নয়া প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় দিন গুনছে ব্রিটেন। মুখোমুখি লড়াইয়ে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনক এবং লিজ ট্রাস। তবে দৌড়ে ঋষির থেকে ঢের এগিয়ে রয়েছেন লিজ।
ব্রিটেনের অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, গত চার দশকে দেশে মুদ্রাস্ফীতির হার সর্বোচ্চে গিয়ে ঠেকেছে। তার উপর বেকারত্বের হারও আশঙ্কাজনক গতিতে বেড়ে চলেছে। ব্য়াঙ্ক অফ ইংল্যান্ড জানিয়েছে, বেকারত্ব বৃদ্ধির এই হার ২০২৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তাই যত শীঘ্র নয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন সম্পন্ন হবে, মুদ্রাস্ফীতি ঠেকাতে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগ্রহণ ততই দ্রুত সম্ভব হবে ববে মত বিশেষজ্ঞদের।
বিগত অর্থমাসের শেষ ত্রৈমাসিকের অন্তিম দিনে ডলারের মূল্য এবং বেসিস অনুযায়ী ভারতের অর্থনীতি ছিল ৮৫৪.৭ বিলিয়ন ডলারে। ব্রিটেনের ক্ষেত্রে এই অঙ্ক ছিল ৮১৬ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফ-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার হতে পারে ৭ শতাংশের বেশি। এই মুহবর্তে আমেরিকা, চিন, জাপান এবং জার্মানির পরই পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে ভারতীয় অর্থনীতি। একদশক আগে ভারত ছিল একাদশতম স্থানে, ব্রিটেন ছিল পঞ্চম স্থানে।
তবে বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে ব্রিটেনের থেকে এগিয়ে গেলেও, ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটির বোশি। সেখানে ব্রিটেনের জনসংখ্যা মাত্র ৬ কোটি ৮৫ লক্ষ। ব্রিটেনের চেয়ে ভারতের জনসংখ্যা ২০ গুণ বেশি। তাই সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিশ্ব তালিকায় পাঁচ নম্বরে উঠে এলেও, ভারতীয়দের তুলনায় ব্রিটেনের নাগরিকদের জীবনের মান অনেক উন্নত। ভারতীয়দের থেকে তাঁদের আয়ও অনেক বেশি। দারিদ্র্যের হারও ভারতেই বেশি।
জীবনের মানে এখনও ব্রিটেনের থেকে ঢের পিছিয়ে ভারত
শুধু তাই নয়,মানবিক উন্নয়ন সূচকেও ভারতের থেকে ঢের এগিয়ে ব্রিটেন। মানবিক উন্নয়নের আওতায় পড়ে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জীবনের মান। সেখানে ১৯৮০ সালে ব্রিটেনে মানুষের জীবনের যা মান ছিল, সেই লক্ষ্যপূরণেই আরও ১০ বছর লাগবে ভারতের। কোন দেশ কতটা ধনী, তা দেশের মানুষের স্বচ্ছলতার উপর নির্ভর করে। সেই নিরিখেও স্পষ্ট পার্থক্য।