নয়াদিল্লি: জইশ জঙ্গির মোবাইলে অজিত ডোভালের দফতর ও রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ভিডিওর হদিশ মেলার পর সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগে দেশের গোয়েন্দারা।


সম্প্রতি, জইশ-ই-মহম্মদের এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয় জম্মু ও কাশ্মীর থেকে। ওই জঙ্গির মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখতে গিয়ে চমকে ওঠেন গোয়েন্দারা। দেখা যায়, ওই জঙ্গির মোবাইলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের দফতরের ভিডিও ক্লিপ রয়েছে। 


এছাড়া, ওই জঙ্গির মোবাইল থেকে রাজধানী দিল্লির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ভিডিও ক্লিপও উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। এরপরই, সতর্কতা জারি করা হয়। গোটা বিষয়টি কী করে ঘটেছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোথায় গাফিলতি থেকে গিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 


জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক আধিকারিক জানান, গত ৬ তারিখ উপত্যকা থেকে হিদায়তুল্লাহ মালিক নামে এক জইশ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় সে স্বীকার করে, ডোভালের দফতরে সে রেকি করতে গিয়েছিল। এছাড়া, দিল্লির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলেও সে রেকি করেছে। বহু ভিডিও শ্যুট করেছে।


এরপর ওই জঙ্গি তার স্বীকারোক্তিতে যা জানায়, তা গোয়েন্দাদের ঘুম কেড়ে নেয়। সূত্রের দাবি, সে জানিয়েছে, ওই রেকি করার পর ভিডিও ক্লিপগুলি সে পাকিস্তান জইশ কমান্ডারদের পাঠিয়ে দিয়েছে।


পুলিশের ওই আধিকারিক জানান, শোপিয়ানের বাসিন্দা মালিক হল জইশের বেনামি সংগঠন লস্কর-এ-মুস্তাফার প্রধান। অবৈধ কার্যকলাপ রোধ আইনের আওতায় তাকে অনন্তনাগ থেকে গ্রেফতার করে বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। তার হেফাজত থেকে বহু আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।


সূত্রের খবর, জেরায় মালিক স্বীকার করে, গত বছর মে মাসে সে বিমানে করে দিল্লি যায় এবং ডোভালের দফতরের ভিডিও তোলে। পরে, সেই ক্লিপগুলি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে 'ডক্টর' নামে পাক কমান্ডারকে পাঠায়। 


মালিক স্বীকার করে, এর আগে ২০১৯ সালে সাম্বা সেক্টরে সীমান্তেও সে রেকি চালিয়েছিল। সেই সময় তার সঙ্গে ছিল সমীর আহমাদ দার, যাকে পুলওয়ামা হামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে এনআইএ।


এই ঘটনায় রাজধানীর সুরক্ষা-ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। 


২০১৬ সালে উরি সার্জিকাল স্ট্রাইক ও বালাকোট এয়ার স্ট্রাইকের পর থেকে জঙ্গিদের হিট-লিস্টে রয়েছেন অজিত ডোভাল। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, ১৯৯৪ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর জইশ প্রধান মাসুদ আজহারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ডোভাল। পরে, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান আইসি-১৮৪ অপহরণের পর আজহারকে কান্দাহারে নিয়ে যাওয়ার দলে তিনিও ছিলেন।