লখনউ: সরকার গঠন করা পরের বিষয়। উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh Election 2022) আরও কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav)। করহল (Karhal Constituency) থেকে সমাজবাদী পার্টির (Samajwadi Party) প্রার্থী হয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার গণনা শুরু হতে সেখানে পিছিয়েই ছিলেন তিনি। তবে বেলা ১০টা নাগাদ এগিয়ে যান অখিলেশ। এই মুহূর্তে করহলে বহুজন সমাজ পার্টি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বিজেপি থেকে আসা বিদ্রোহী নেতা মারাঠা বীরেন্দ্র বর্মাকে সেখানে প্রার্থী করেছে তারা। বিজেপি করহলে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। অখিলেশের বিরুদ্ধে তাদের প্রার্থী কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এসপি সিংহ বাঘেল। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোটগণনা চলছে করহলে। এখনও পর্যন্ত সেখানে প্রায় ৯ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন অখিলেশ। বাঘেলের প্রাপ্ত ভোট ৫০৬।



এ দিন গণনা শুরু হলে টুইটারে অখিলেশ লেখেন, 'পরীক্ষা এখনও বাকি রয়েছে। মন শক্ত করার সময় এসেছে। দিন-রাত এক করে গণনাকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার জন্য় সপা এবং জোটের কর্মীদের ধন্যবাদ। গণতন্ত্রের সৈনিকগণ জয়ের প্রমাণপত্র নিয়েই ফিরবেন।'


২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশে দ্বিতীয় বার বিজেপি-র ক্ষমতায় ফেরা আটকানো অত্যন্ত প্রয়োজন বিরোধীদের। সেই কাজে সেখানে বিরোধী শিবিরের প্রধান মুখ অখিলেশ। দলের বৈতরণী পার করে দিতে চেষ্টায় কোনও খামতি রাখেননি তিনি। কিন্তু শুরুতে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীই হতে চাননি অখিলেশ। তকিন্তু কাণ্ডারীর হাতেই যদি হাল না থাকে, তাহলে বাকিরা কী করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে দলের অন্দরে। খানিকটা হলেও উৎসাহে ছেদও পড়ে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতেই  তাই দু’দশকের রাজনৈতিক জীবনে এ বার প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অখিলেশ। তার জন্য সমীজবাদী গড় বলে পরিচিত করহলকে বেছে নেন তিনি।


আরও পড়ুন: Punjab Election Result 2022: পাঞ্জাবে চমকৌর সাহেব কেন্দ্রে এগিয়ে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী চন্নি, মোট আসনে এগিয়ে কোন দল?


একমাত্র ২০০২ সালকে বাদ দিলে, ১৯৯৩ থেকে একটানা মইনপুরীর করহলে জয়ী হয়ে আসছে সমাজবাদী পার্টি। এত দিন ওই কেন্দ্র দলের নেতা সোবরন সিংহ যাদবের দখলে ছিল। এ বার সেখান থেকেই প্রার্থী হচ্ছেন অখিলেশ। কিন্তু মুলায়ম-পুত্রের জন্য আসন হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ নেই সোবরনের। বরং সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, অখিলেশের জন্য স্বেচ্ছায় ওই আসন ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। অখিলেশকে করহল থেকে ভোটে দাঁড়ানোর সুপারিশও তাঁরই বলে জানান সোবরন।


একসময় করহল সংলগ্ন সৈফইয়ের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহ করেছিলেন অখিলেশ। সেখানকার মইনপুরী লোকসভা কেন্দ্র থেকে পাঁচ বার সাংসদ হয়েছেন মুলায়ম। তাই দলের তরফেও তাঁকে সেখানে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানানো হয় বলে সূত্রের খবর। করহল থেকে রেকর্ড ভোটে অখিলেশ জয়ী হবেন বলে আশাবাদী সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদব।


এর আগে, ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অখিলেশ। ৩৮ বছর বয়সে সেই সময় দেশের কনিষ্ঠতম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনিই। কিন্তু সে বারও বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেননি অখিলেশ। বরং নিজের তৎকালীন লোকসভা আসন কনৌজে স্ত্রী ডিম্পল যাদবকে প্রার্থী করে বিধান পরিষদের সদস্যপদ গ্রহণ করেন নিজে। কিন্তু এ বার শেষ পর্যন্ত বিধানসভা নির্বাচনের ময়দানে নামতেই হল তাঁকে।